গভর্নর
এস আলম-বেক্সিমকোর কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেব না

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৫ পিএম

ছবি :সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এস আলম এবং বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের জাতীয় সম্পদ এবং এগুলোকে বন্ধ হতে দেয়া হবে না। তিনি আরো জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত হাজার হাজার কর্মীর ভবিষ্যত এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় এগুলোর কার্যক্রম চলমান রাখা হবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মনসুর বলেন, এস আলম এবং বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক কর্মী কাজ করছেন, যারা উৎপাদন কার্যক্রমের সাথে জড়িত। তাদের সাথে ব্যাংকেরও সম্পর্ক রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। আমাদের লক্ষ্য হবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখা, যাতে এগুলো দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা খুব সহজ, কিন্তু গড়ে তোলা অনেক কঠিন এবং দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। সুতরাং, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখা এবং ফান্ড ডাইভারশন এড়ানো।
ড. মনসুর বলেন, ইমোশন দিয়ে দেশ চালানো যায় না। বাস্তববাদী হতে হবে এবং সঠিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি ব্যাংকগুলোর আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বের কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গ্রাহকদের আমানত ফেরত দেওয়া। তবে সেটা সহজভাবে হবে না, সব হিসাব-নিকাশ করে সহায়তা দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদও উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, গত তিন মাসে আমাদের ব্যাংক অনেক অগ্রগতি করেছে। ২৩০০ কোটি টাকার ঋণাত্মক কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এখন দুই হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে এবং আমরা ৪৯৭২ কোটি টাকার নতুন আমানত সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন নতুন ঋণ বিতরণ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে এবং ২৭০০ এজেন্ট পয়েন্টে তিনজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
এস আলম গ্রুপের বকেয়া টাকা আদায় বিষয়ে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ জানান, আমরা ইতোমধ্যে চারটি আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা নিয়োগ করেছি, যারা সার্বিক তথ্য সংগ্রহ করছে। তদন্ত শেষে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী জানুয়ারির মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ হবে।
তিনি আরো বলেন, এস আলমের শেয়ার বিক্রির জন্য শিগগিরই আদালতে মামলা করা হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে এস আলমের মালিকানার মধ্য থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করা হবে।
এছাড়া, ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ জানান, ‘‘ভিসা পেলে আমরা শিগগিরই সৌদি আরব যাবো। সেখানে ইসলামি ব্যাংক, আল রাজি ব্যাংক এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ আগের বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগ করা হবে।’’
এস আলম গ্রুপের বর্তমান আর্থিক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এস আলমের কোম্পানির ৬০ মিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যে বকেয়া হয়ে গেছে, এবং আগামী মাসে আরও ১৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে।’’ এছাড়া, গ্রুপটি ২০ হাজার কোটি টাকার মতো দায় পরিশোধ করেছে এবং শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এই দায়ের অর্ধেক সমন্বয় করা হবে।
এস আলমের শেয়ার মূল্য বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা, এবং বাকি ১০ হাজার কোটি টাকার নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে।