পাঠ্য বইয়ে যেভাবে উঠে আসলো শহীদ আবু সাঈদ-মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম
হাসিনা সরকারের দোর্দণ্ড ক্ষমতার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে চুড়ান্ত পর্যায়ে নিতে সেদিন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধের মহান আত্মত্যাগ মনে রাখবে বাংলাদেশ। তাদের সেই আত্মত্যাগ ও বীরত্বগাথার গল্প এবার উঠে এসেছে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন কেন্দ্রিক দেয়ালজুড়ে আঁকা গ্রাফিতির পাশাপাশি তুলে ধরা হচ্ছে দেশের ইতিহাসের নায়কদের বীরত্বগাথা অবদানের কথা। একইসঙ্গে পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ছবি এবং উদ্ধৃতি।
শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে এরইমধ্যে পুরোদমে কাজ শুরু করে দিয়েছে ছাপাখানাগুলোয়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে নতুন বছরের পাঠ্যক্রমও। নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকেই দেওয়া হবে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি বই। তবে কিছুটা পরিমার্জন হয়ে বদল হচ্ছে চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবই। নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তে মোটা দাগে বেছে নেওয়া হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাতিল করা ২০১২ সালের পাঠ্যক্রম।
বিশেষভাবে স্থান পাচ্ছে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান। নতুন বছরের পাঠ্যসূচিতে থাকছে শহিদ আবু সাইদ এবং মীর মুগ্ধের কৃতিত্বগাথার গল্প। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, গণঅভ্যুত্থান হয়েছে ৬৯, ৯০ এ এরশাদ স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। এবার আমাদের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে ২৪ সালে। এই তিন সময়ে অনেক ঘটনা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
একইসঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে প্রাধান্য পাচ্ছে দেশের সঠিক ইতিহাস। বাংলাদেশের গৌরব-উজ্জ্বল ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কৃতিত্ব, ৭ মার্চের ভাষণ, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা, মওলানা ভাষানীর সংগ্রামী জীবনের পাশাপাশি থাকছে জাতীয় চার নেতার ভূমিকা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, তার নাম কেনো বাদ যাবে।
গত ১৭ বছর পাঠ্যবইয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন ছবি এবং বক্তব্যের উদ্ধৃতির বিষয় উল্ল্যেখ করে দৃষ্টিকটু এসব লেখা-ছবি বাদ দেয়ার কথা জানিয়ে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান আরও বলেন, বইয়ের মূল পৃষ্টার পরের ও পেছনের পৃষ্টায় এই দলীয় প্রচার প্রোপাগান্ডার ছবি এবং তার বর্ণনা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিলো তা বাদ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে আঁকা হয় অসংখ্য গ্রাফিতি। সেগুলোর মধ্য থেকে ব্যাপক সাড়া জাগানো গ্রাফিতিগুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকছে নতুন বইয়ে। জানুয়ারিতে যারা দশম শ্রেণিতে পড়বে পাঠ্যবই হবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আলোকে।