বুলেট বয়ে বেড়াচ্ছে তিমাম, বের করতে গেলে কাটা পড়বে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
১৩৩ দিন ধরে শরীরে বুলেট বয়ে বেড়াচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আবু হুরায়রা। জুলাই অভ্যুত্থানে রাজধানীর মিরপুরে গুলিবিদ্ধ ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসা চলছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। পরিবারের চাওয়া, দেশে যেহেতু বুলেট বের করা যাচ্ছে না, তাই বিদেশে নেয়া হোক আবু হুরায়রাকে।
১৯ জুলাই থেকে কিশোর আবু হুরায়রার মেরুদণ্ডের নিচের দিকে আটকে আছে বুলেট। এক্স-রে রিপোর্ট দেখিয়ে হুরায়রার শারীরিক অবস্থার ব্যাখ্যা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলের ডাক্তার মোহাম্মদ আবু নাছের।
তিনি বলেন, যেখানে বুলেট আটকে আছে, এটা বের করা যায় না। কারণ এটা বের করতে গেলে রোগীর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো কাটা পড়বে।
জুলাইয়ের উত্তাল সে সময়ে বিকেলে রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বরে বাসার সামনে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছিলেনে আবু হুরায়রা তিমাম। মিরপুর ১০ থেকে সংঘর্ষের রেশ চলে আসে এলাকার গলিতে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলি লাগে হুরায়রার শরীরে। ৪ মাসের বেশি সময় ধরে দুরন্ত তিমামের এখন ঠিকানা হাসপাতালের বিছানা। তারপরও যেন এতটুকু আক্ষেপ নেই ছোট্ট আবু হুরায়রার।
তিনি বলেন, আমরা যখন শুনলাম ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়েছে, তখন মনে একটা শান্তি এসেছে। এর আগে যারা গুলিতে আহত হয়েছে, শুধু তারাই জানেন তাদের ওপর দিয়ে কি গিয়েছে।
মা জিনাত চৌধুরী এই কষ্টের ব্যাখ্যা কীভাবে করবেন, সন্তানের এমন অবস্থায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি।
জিনাত চৌধুরী বলেন, যে মায়ের বুক খালি হয়েছে, যারা চলে গেছে তারা আর ফিরে আসবে না। যারা আমার ছেলের মতো পড়ে আছ, স্কুল নেই, খেলাধুলা নেই এটা কীভাবে মানব। হঠাৎ করে দেখা যাচ্ছে ছেলের প্রসাব আটকে যাচ্ছে, কোনো সময় খেতে পারে না এটা কীভাবে মানব।
সার্বিক দিক বিবেচনায় সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে দেশের বাইরে আবু হুরায়রার শরীরের ভেতর আটকে থাকা বুলেট অপসারণে অস্ত্রোপচারের বিষয়ে। এরই মধ্যে বিদেশ নেয়ার দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আবু হুরায়রা বলেন, আমরা নতুন একটা বাংলাদেশের অপেক্ষায় আছি। সামনে নতুন কিছু আমরা পাব এর আশায় আছি।