ডাক্তার টমাস দুলু রায়, ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য ও রণবীর বড়ুয়াকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিষ্ণু গোপ এবং চন্দন সেনগুপ্তকে কোষাধ্যক্ষ করে যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি নিউইয়র্কের জামাইকায় গ্রীন চিলি রেস্তোরায় যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের সাধারণ সভায় তিন বছর মেয়াদী নতুন কার্যকরী এ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও সভায় সংগঠনের বোর্ড অফ ট্রাস্টি এবং এ্যাডভাইজারি কাউন্সিলও (উপদেষ্টা পরেষদ) গঠিত হয়। সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির নবনির্বাচিত সহ সভাপতিরা হলেন- প্রদীপ মালাকার, রীণা সাহা ও তপন সেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- পার্থ তালুকদার, কুমার বাবুল সাহা ও সুমন মিত্র এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন সুকান্ত দাস। 

এছাড়াও অন্যান্য সম্পাদকীয় পদে নির্বাচিতরা হলেন- পিয়াস দাস, জলি সাহা, বামেশ রায়, সুজন রায়, রণজিৎ পুরকায়স্থ, প্রদীপ কুন্ডু, জয়ন্ত চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ দেব, এ্যাডওয়ার্ড হলসানা, অমিত ঘোষ, রাজীব নন্দী, বিশ্বজিৎ সাহা, রাণা দত্ত, আশীস পাল, ঝলক রায়, বিকাশ সরকার, গৌতম সরকার, রণি দাস, মৈত্রিশর বড়ুয়া ও বিপ্লব পাল। 

নির্বাহী সদস্যরা হলেন- হিমাদ্রী বণিক, অনিমেষ রায়, অসীম কুমার ধর, শৌমিক চৌধুরী, গোপাল চন্দ্র গোপ, হিরালাল রায়, সুমন দাস, শেখর রঞ্জন পাল ও স্টিভেন মন্ডল। সংগঠনের নবনির্বাচিত ডিরেক্টররা হলেন- ডাক্তার সমীর সরকার, ইন্দ্রজিৎ সরকার, দেবাশীষ দেবনাথ, শ্যামল রুদ্র, অমিত ঘোষ, রমাকান্ত বিশ্বাস, সোমনাথ ঘোষ, শ্যামল চন্দ ও সমর কৃষ্ণ রায়। 

বোর্ড অফ ডিরেক্টরর্সের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মেম্বার সেক্রেটারি পদে নির্বচিতরা হলেন- অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, রূপকুমার ভৌমিক ও চন্দন সেনগুপ্ত। বোর্ড অফ ট্রাষ্টির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হয় সুশীল কুমার সাহাকে। এছাড়া একুশজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে উপদেষ্টা পদে নির্বাচন করা হয়। 

কমিটি গঠনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা অবিনাশ আচার্য্য, ডক্টর জিতেন রায় ও অনুকূল অধিকারী এবং বিষয় নির্ধারণী কমিটিতে ছিলেন- সুশীল কুমার সাহা, অসীম সাহা, ভজন সরকার, সুশীল সিনহা, সুকান্ত দাস ও ডক্টর দিলীপ নাথ।   

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অধ্যাপক নবেন্দু দত্তের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভা যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু গোপ। প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে চলা এই সভায় বক্তারা বাংলাদেশে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ের উপর ব্যাপক আলোচনা করেন। 

বক্তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরেুদ্ধে অব্যাহত বৈষম্যমূলক আচরণ ও সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা করেন। বিশেষ করে আ্যডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মত নিরপরাধ সংখ্যালঘু নেতাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননার কথিত অভিযোগে দায়েরকৃত বানোয়াট রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাগুলো প্রত্যাহার করা এবং চট্টগ্রামের হাজারিগলির ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত নির্যাতিতদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ারও জোর দাবি জানান। 

বক্তারা প্রশ্ন তোলে বলেন, গত ৫ আগস্টের সরকার পতনের সময় থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, উপাসনালয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, হত্যা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষকসহ অসংখ্য সংখ্যালঘু ব্যক্তিকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনার জন্য দায়ি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনা-সমর্থিত সরকার কোনো দৃশ্যমান আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন!  দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট বিষয়ে বলতে গিয়ে বক্তারা সম্প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেল সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেয়ার যে প্রস্তাব করেছেন এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তারা। 

বক্তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, তিনি নিজে এবং তার সহযোগী ‘ছাত্র সমন্বয়করা’ ন্যায় বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা-ভিত্তিক সমাজের কথা বলছেন, কিন্তু সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন? সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদসহ দেশে আন্দেলনরত সব সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর আট দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলা হয়, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের একটি ড্রাফট বিল, যা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া হয়েছিল, এখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে।  

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, সিতাংশু গুহ, ডক্টর জিতেন রায়, প্রদীপ মালাকার, রূপ কুমার ভৌমিক, ডক্টর দিলীপ নাথ, চঞ্চনা চাকমা, চন্দন সেনগুপ্ত, ভজন সরকার. সুশীল সিনহা, ডাক্তার প্রভাত দাস ও ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য প্রমুখ।

এছাড়াও সভায় শিতাংশু গুহ, ডাক্তার প্রভাত দাস, পরেশ সাহা, রনেশ চক্রবর্তী, রণজিৎ ভাদুড়ী, বাপ্পী সেন চৌধুরী, পারিজাৎ দাস, শিবু পোদ্দার, দিলীপ কুমার নাথ, হরিগোপাল বর্ম্মণ, নিতাই নাথ, রবীন্দ্র শীল, আশীষ ভৌমিক, অজিত চন্দ, মতিলাল নাথ, সুভাষ সাহা, দিলীপ চক্রবর্তী, প্রণব রায় রনো, চঞ্চল চক্রবর্তী, বঙ্কিম বৈরাগী, রাজর্ষি নাথ, মানিক চন্দ্র দাস, শোভন লাল রায়, মৃন্ময় ব্যানার্জী, পরেশ ধর, চঞ্চনা চাকমা, মোহনজী বানিয়া, শেখর রঞ্জন পাল, হিরালাল রায়, হিরেন্দ্র চৌধুরী, লুমেন বড়ুয়া, রাজেশ রায়, বিকাশ বড়ুয়া, প্রসেনজিৎ বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।