শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য ৯ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট এবং আরো ৪ শতাংশ বাড়তি বেতন দেয়া হবে। শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। এই বাড়তি বেতন শ্রমিকরা তাদের ডিসেম্বর মাসের বেতনের সঙ্গে পাবেন।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৯ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যা প্রতিবছর বাড়ানো হয়। আর বাকি ৪ শতাংশ বাড়তি ইনক্রিমেন্ট মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সম্মতিতে প্রদান করা হবে। ডিসেম্বর মাসের বেতনের সঙ্গে এই বাড়তি মজুরি দেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, যেসব শ্রমিকদের ডিসেম্বরে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট হওয়ার কথা ছিল, তাদের ৯ শতাংশ বাড়তি মজুরি দেয়া হবে। আর যাদের ইনক্রিমেন্ট হওয়ার কথা নয়, তারা পাবেন ৪ শতাংশ বাড়তি মজুরি। নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা এই বাড়তি মজুরি পেতে থাকবেন।
এ সময় তিনি তৈরি পোশাক খাত নিয়ে দেশের বাইরে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্কতা জানান। তিনি বলেন, কিছু দেশের সংবাদপত্রে খবর ছড়ানো হচ্ছে যে, বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের ক্রেতাদের সরিয়ে নেয়া এখনই সময়। শ্রমিকরা অনেকে এসব বিষয়ে সচেতন নন, আর কিছু জায়গা থেকে উস্কানিও আসছে।
শ্রম সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে জানান, সেপ্টেম্বর মাসে সরকার, মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ মিলে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমমান উন্নয়নের জন্য ১৮ দফা নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে ১৮তম দফায় বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের বিষয়টি ছিল। এই ব্যাপারে একটি কমিটি গঠন করা হয়, যাদের সুপারিশে এবং নির্ধারিত সময়ের পরিমাণ ১৫ দিন বাড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার জানান, পাঁচটি বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি শ্রমিকদের কাজ ফিরে শুরু করার এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে পা না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ঘোষণার মাধ্যমে তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের জন্য এক বড় পরিবর্তন এসেছে, যা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সঙ্গে আরও কাজের পরিবেশ উন্নত করতে সহায়ক হবে।