বাংলাদেশের সঙ্গে অব্যাহত অংশীদারিত্বের প্রত্যাশা ব্যক্ত করল ভারত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আজ জানিয়েছেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশে গত আগস্টে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সম্পর্ক বিঘ্নিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি আরও বলেন, নয়াদিল্লি ঢাকা সঙ্গে তার সম্পর্কগুলোকে উষ্ণ, পারস্পরিক কল্যাণমূলক এবং ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
আজ বাংলাদেশে তার সফরের এক অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সচিব পর্যায়ের পররাষ্ট্র দপ্তর পরামর্শ (এফওসি) বৈঠক শেষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মিশ্রি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এ বছর আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। আমরা কখনও এ সম্পর্কে কোনো জটিলতা বা সংকট অনুভব করিনি।
মিশ্রি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফোন করার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ইউনূসকে ফোন করেছিলেন, এবং তাদের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী, এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক-সুবিধাজনক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কোনো কারণ নেই।
তিনি জানান, আমরা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যতকে জন-কেন্দ্রিক, জনমুখী এবং সমৃদ্ধিশালী দেখতে চাই, যেখানে জনগণের কল্যাণই হবে মূল উদ্দেশ্য।
এ ছাড়া মিশ্রি বলেন, ভারতের সহায়তায় পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো, ব্যবসা-বাণিজ্য, সংযোগ, পানি এবং বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্কগুলোর মাধ্যমে আমাদের সম্পর্ক প্রতিফলিত হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সাথে তার আলোচনাকে মিশ্রি অকপট, বন্ধুত্বপূর্ণ, গঠনমূলক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এই বৈঠক আমাদের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করার সুযোগ দিয়েছে এবং আমি এর জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা একসঙ্গে একটি সুদূরপ্রসারী, ইতিবাচক, গঠনমূলক ও পারস্পরিক কল্যাণকর সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।
বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিয়ে ভারতীয় পক্ষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মিশ্রি বলেন, আমি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং কল্যাণের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগগুলো তুলে ধরেছি।
তবে শুধু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাই নয়, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বৈঠকে সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং কূটনৈতিক সম্পত্তির ওপর হামলা সম্পর্কিত কিছু দুঃখজনক ঘটনা নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশের আগরতলা মিশনে হামলা এবং কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনে জাতীয় পতাকার অবমাননার বিষয়গুলোও তুলে ধরেন।
মিশ্রি বলেন, আমরা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এসব বিষয়ে গঠনমূলক এবং সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি আশা করি, এবং আমরা এই সম্পর্কটিকে ইতিবাচক ও ভবিষ্যৎমুখী দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ একইসাথে কাজ করার মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য একটি শক্তিশালী এবং সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলবে।
এ বৈঠকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোচনা হলেও, ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় এবং উন্নত করার প্রতি উভয় পক্ষের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়েছে।