আবারো রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
এক সপ্তাহের যুদ্ধে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু, বুথিডং ও পালেতাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরসহ ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাসরত কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, নতুন বাস্তবতায় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে সরকার।
তিনি আরো বলেন, রাখাইন প্রদেশের ৮০-৮৫ শতাংশ এলাকা এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের প্রধান বসবাসের অঞ্চলগুলোও তাদের দখলে রয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ এখন আরাকান আর্মির হাতে।
খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি বনাম মিয়ানমারের শাসক সামরিক জান্তা বাহিনীর লড়াইয়ের চূড়ান্ত ফল কী হয়, তা এখনো অস্পষ্ট। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে উদ্যোগী হচ্ছে- যাতে অন্তত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। তবে গভীরভাবে বিবেচনা না করে এ বিষয়ে নির্ণায়ক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। বিদ্রোহীরা সীমান্ত দখলের পরে বাংলাদেশ সরকার টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন চট্টগ্রামবাসী।
উল্লেখ্য এক সময় জান্তার ‘চক্ষুশূল’ রোহিঙ্গা মুসলিমরা চলতি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হয়েছিল! আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) যোদ্ধারা গত ছয় মাস ধরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জান্তা ফৌজের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়েছে। যদিও তাতে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন করে আরাকান আর্মির নিশানা হতে পারেন বলে আশঙ্কা।
জাতিসংঘ বলছে, ২০১৭-র আগস্টে মিয়ানমারে গোষ্ঠীহিংসা শুরুর পরে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। যাদের অধিকাংশই রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় ধাপে ধাপে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর চুক্তি হলেও জান্তা সরকার তা ঠিকভাবে মেনে চলেনি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, এখনো মিয়ানমারে রয়েছেন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। গৃহযুদ্ধের জেরে নতুন করে শরণার্থীর ঢল নামলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।