বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সেভেন সিস্টার্সে ব্যান্ডউইথ নেয়ার প্রস্তাব বাতিল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যে ব্যান্ডউইথ সরবরাহের প্রস্তাবটি বিটিআরসি বাতিল করেছে। সম্প্রতি বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমানের সই করা এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ভারতীয় টেলিকম অপারেটর ‘ভারতী এয়ারটেল’-এর সহযোগিতায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোম এই প্রস্তাবটি দিয়েছিল। তবে বিটিআরসি জানিয়েছে, এ ধরনের ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশ আঞ্চলিক হাব হিসেবে দুর্বল হয়ে পড়বে, এবং ভারতের অবস্থান শক্তিশালী হবে।
বর্তমানে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য থেকে চেন্নাই সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের দূরত্ব ৫,৫০০ কিলোমিটার, এবং সিঙ্গাপুরে সিগন্যাল পৌঁছাতে ৮,৭০০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। এতে প্রায় ৮৭ মিলিসেকেন্ড সময় লাগে। কিন্তু বাংলাদেশের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করলে সিঙ্গাপুরের দূরত্ব ৩,৭০০ কিলোমিটার কমে যাবে এবং ল্যাটেন্সি ৩৭ মিলিসেকেন্ড কমবে। এর ফলে ভারত এসব রাজ্যে কম খরচে উন্নত ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে।
এই সুযোগ নিতে গত বছর বিটিআরসির কাছে ভারতীয় এয়ারটেলের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে আখাউড়া সীমান্ত হয়ে সেভেন সিস্টার্সে ব্যান্ডউইথ সরবরাহের প্রস্তাব দেয় দেশীয় প্রতিষ্ঠান সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোম। তার আগে ২০২২ সালে এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে ভারতী এয়ারটেল। এ ব্যাপারে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চায় বিটিআরসি। যদিও এই আবেদন নিয়ে আপত্তি তুলে আসছে অন্য অংশীজনরা।
আইআইজিএবির মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ বলেন, আমরা আগেও বলেছি যে এ ধরনের ট্রানজিট কখনোই লিগ্যাল হতে পারে না।
তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ভারতকে ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের অব্যবহৃত প্রায় ৪ হাজার ৯০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ কাজে লাগানো ঝুঁকিতে পড়বে। বাধাগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের মেটা, গুগল, আকামাই এবং অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইথ সংযোগ কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাও।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ট্রানজিট আমাদের গাইডলাইনেই নেই।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে একমত হতে পারেনি সামিট ও ফাইবার অ্যাট হোম।
ফাইবার অ্যাট হোম গ্লোবালের চিফ অপারেটিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মশিউর রহমান বলেন, এখানে আইসিটি আমদানি করে নর্থ-ইস্টার্ন বা সেভেন সিস্টার্স স্টেটে বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা হয়নি। আলোচনা হয়েছে সাবমেরিন ক্যাবলের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ নিয়ে। এটা কীভাবে সাবমেরিন ক্যাবলের জন্য ক্ষতিকর, তা আমার বোধগম্য নয়।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সঙ্গে ট্রানজিটের অনুমতি দেয়ার জন্য টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো আগের চিঠিও বাতিল করেছে বিটিআরসি।