শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধায় সিক্ত হতে সেজেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
আগামীকাল ৫৪তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধে। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, লাখো শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। বাংলার মাটিতে ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেয় এই স্বাধীন দেশ। এবার জাতি স্মরণ করবে সেই বীর সন্তানদের, যারা নিজেদের জীবন দিয়ে স্বাধীনতা এনেছিল। বাঙালি জাতি পাবে বিজয়ের এক নতুন উপলক্ষ, যেখানে শহীদদের আত্মদানে অর্জিত দেশের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদনে নামবে লাখো মানুষ।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রাঙ্গণকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজের আভায়। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। রং তুলির আঁচড় এবং বাহারি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে চারপাশ। সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছপালা এবং ফুলগাছের সুবাসে ভরে উঠেছে পুরো এলাকা। লেক সংস্কার এবং স্মৃতিসৌধের পাদদেশ থেকে চূড়া পর্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পুরো আয়োজন প্রস্তুত।
গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ভোরের কাগজকে জানান, ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, বিদেশি কূটনীতিকসহ লাখ লাখ জনতা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধ সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে। আমরা এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি, যার মধ্যে রয়েছে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সীমানা প্রাচীর মেরামত, লেক সংস্কার এবং রঙ-রোগনের কাজ। এখন স্মৃতিসৌধ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
এদিকে, ঢাকা জেলা পুলিশ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং আশপাশের এলাকায়। পুলিশ বাহিনীর ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন ভোরের কাগজকে জানান, স্মৃতিসৌধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও নজর রাখবে।
এ বছর বিজয় দিবসটি একটি বিশেষ গুরুত্ব অর্জন করেছে, কারণ ছাত্র আন্দোলন এবং সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে নতুন আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। ১৭ বছর পর বিএনপি আবারো বিজয় দিবসের দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাবে।
আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে যেতে পারিনি। বিভিন্ন মামলা এবং হামলার কারণে আমাদের উপস্থিতি আটকানো হয়েছিল। তবে এ বছর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং বিজয় দিবসের দিন স্মৃতিসৌধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।
সাভারের তেঁতুলঝড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মুরাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পর আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেয়েছি। এবার আমরা বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে যাব।
আগামীকাল বিজয় দিবসের দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামবে, যেখানে লাখো মানুষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসবে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর এই দিনটি বাঙালি জাতির গৌরবময় ইতিহাসের অমলিন একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।