আমি আনন্দিত, উৎফুল্ল ও সন্তুষ্ট : বদিউল আলম মজুমদার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আংশিক বাতিলের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। এই রায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার একটা গুরুত্বপূর্ণ দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি করে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের দুটি ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত বলেন, ধারা দুটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে, যেটি হচ্ছে গণতন্ত্র। ওই দুটিসহ সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেছেন আদালত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তা করতে) হিসেবে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সংস্থা, ব্যক্তিসহ বেশ কয়েকজন যুক্ত হন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমি খুব উৎফুল্ল, আনন্দিত এবং অত্যন্ত সন্তুষ্ট এই রায়ে। আমি মনে করি যে এটা একটা ঐতিহাসিক রায়। এটা একটা সেমিনাল জাজমেন্ট।’
তিনি আরো বলেন, আজকে তিনি শুধু তার জন্য নয়, পুরো দেশবাসীর জন্য আনন্দিত। এই রায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার একটা গুরুত্বপূর্ণ দ্বার উন্মোচিত হলো। তবে এটা নির্ভর করবে ভবিষ্যতে কীভাবে আচরণ করা হয়। গণতন্ত্র ফিরে আসা, গণতান্ত্রিক উত্তরণ মানে একটা পরিবর্তন। সবাই যদি আচরণে পরিবর্তন আনে, রাজনীতিবিদরা যদি তাদের আচরণে পরিবর্তন আনে, সবাই নিজেদের করণীয় করে, তাহলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। আর তা না হলে ফিরবে না।
সুজন সম্পাদক বলেন, দুভাবে কর্তৃত্ববাদী সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একটা হলো ত্রয়োদশ সংশোধনী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে। আরেকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সংবিধানে ৭ (ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করার মাধ্যমে। সংবিধান সম্পর্কে কোনো রকম জনগণের আস্থা পরাহত করা এবং এই সংবিধান সম্পর্কে কোনো রকম সমালোচনা করা। এগুলো হলো রাষ্ট্রদ্রোহ।
বদিউল আলম এ সময় জানান, তিনিসহ বহু ব্যক্তি এ বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। আদালত তাকে এবং এ ব্যাপারে যারা সোচ্চার ছিলেন তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।