গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান ড. ইউনূসের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ এএম

ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের অধিবেশনে এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর বর্বরতার অবসানে সিদ্ধান্তমূলক ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের জন্য বাংলাদেশের অবিচল অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বরাবরই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে দৃঢ়ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা সবসময় ইসরায়েল পরিচালিত অব্যাহত অবৈধ দখলদারিত্ব এবং সহিংস দমন-পীড়নের নিন্দা জানিয়েছি। আমরা এ সংকটের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে শান্তি ও সম্প্রীতিতে পাশাপাশি বসবাস করার মতো একটি ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পক্ষে অটল আছি।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরের রাজধানী কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের একটি বিশেষ অধিবেশনে এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সব পক্ষ ও অঞ্চলের বাইরের স্টেকহোল্ডারদের ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতা বন্ধ করার জন্য সিদ্ধান্তমূলক ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
ড. ইউনূস তার বক্তৃতায় বলেন, তারা এমন এক সময়ে একত্রিত হয়েছেন যখন অধিকৃত গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ১৪ মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও বর্বর গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। এই বর্বরতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। কম করে বললে, দীর্ঘদিন ধরে মেনে চলা আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি, আইন ও কনভেনশনের প্রতি ইসরায়েলের নির্লজ্জ অবজ্ঞা আমরা চরম হতাশার মধ্যে আছি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, লেবাননে যেভাবে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে আরো এটি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে এবং এটি সমগ্র অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি বয়ে আনতে পারে, যা কেবল অর্থনীতি নয়, বৈশ্বিক সমাজ ও রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে।
তিনি বলেন, কায়রো থেকে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে, তাদের ইতিহাসের এই অস্তিত্বের সংকটের সময়ে আমাদের ঐক্য ও অটুট অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশিরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফিলিস্তিনিরা হেলাফেলার যোগ্য নয়। প্রতিটি ফিলিস্তিনির জীবন গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন : ফিলিস্তিনের সংকট শুধু মুসলমানদের নয়, সর্বজনীন সমস্যা: ড. ইউনূস
তিনি বলেন, এটা এমন কোনো বিষয় নয় যা শুধু মুসলমানদের জন্য উদ্বেগজনক, বরং এটি একটি সর্বজনীন বিষয় যেখানে মানুষের মর্যাদা পরীক্ষার সম্মুখীন। গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননে গণহত্যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের শামিল। দায়ীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এ কারণেই, গত নভেম্বরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দাঁড়িয়ে মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধের দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা একটি কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বলেন, জবাবদিহিতার বিষয়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ড অপরাধীদেরকে ভবিষ্যতে আরো নৃশংসতা ঘটানোর ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মানবিক হস্তক্ষেপ ছাড়াও, গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননের পুনর্গঠনের চিন্তাভাবনাকে অগ্রাধিকার দেয়ার সময় এসেছে।