গণঅভ্যুত্থান
বিভিন্ন বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন, জাতিসংঘকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে দুই দফা বাংলাদেশে আসে জাতিসংঘের তদন্ত দল। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর বিভিন্ন বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে। তবে সরকারের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য না পাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে পারেনি তারা।
এ ব্যাপারে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানায়। বিষয়টি সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার বলা হলেও অপরাধ এবং অনেক অপরাধীর তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগতা লক্ষ্য করা গেছে, যা মোটেও কাম্য নয়।
তিনি আরো জানান, এ কারণে তথ্য অনুসন্ধান দল প্রতিবেদন শেষ করতে পারছে না। অবশ্য নতুন করে জানুয়ারির মধ্যভাগে তা শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় প্রতিবেদনও অসম্পন্ন হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চাহিদা অনুযায়ী জাতিসংঘকে তথ্য দিতে কিছুটা দেরি হয়েছে বলে স্বীকার করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ বিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র তৌফিক হাসান। তিনি বলেন, তথ্য অনুসন্ধান মিশনের চাহিদার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বিভাগ থেকে যেসব তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেগুলো জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ে দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের স্বীকৃত পদ্ধতি মেনে তদন্ত কার্যক্রম চালায় তথ্য অনুসন্ধানী দল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়াও অনুসরণ করে তারা। যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করবে, সেগুলোর সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে। বাংলাদেশে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নৃশংস ঘটনার মূল উৎস বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশ করে ডিসেম্বরের শুরুতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে চেয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিনিধি দল। কিন্তু তা হয়নি। এখন তারা জানুয়ারির মাঝামাঝি প্রতিবেদন জমার লক্ষ্যে কাজ করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে আগস্টের শেষ দিকে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঢাকায় আসেন মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের তিন সদস্য। তারা কীভাবে কাজ করবেন, কী সহযোগিতা লাগবে– তা সরকারকে জানান। একই সঙ্গে বাংলাদেশের চাহিদা সম্পর্কে জেনে অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা সারে। এর পর মূল তদন্ত দল ঢাকায় আসে সেপ্টেম্বরে। চার সপ্তাহ বিভিন্ন জেলা সফর করে মাঠ পর্যায়ের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ফিরে যায়।
তথ্য অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকার পক্ষ থেকে তদন্তের স্বার্থে সবধরনের নথি যাচাই করার পূর্ণ নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, চাহিদা অনুযায়ী নথি মেলেনি। বাংলাদেশ সরকার তথ্য দিয়েছে ঠিক, তবে তা আংশিক। জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর বিষয়ে তথ্য চেয়ে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।