‘তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে ফেল’, সামরিক কর্মকর্তাদের কেন বলেছিলেন শেখ হাসিনা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের সময় ৫ আগস্ট সকাল ৯টায় তিন বাহিনীপ্রধানরা গণভবনে যান। এ সময় পুলিশের আইজি এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুবুর রহমানও গণভবনে ছিলেন।
বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশের আইজি আবদুল্লাহ আল মামুনকে দেখিয়ে বলেন, ওরা (পুলিশ) ভালো কাজ করছে। সেনাবাহিনী পারবে না কেন? এ সময় পুলিশের আইজি বলেন, পরিস্থিতি যে পর্যায়ে গেছে, তাতে পুলিশের পক্ষেও আর বেশি সময় এ রকম কঠোর অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের আর কিছু করার সামর্থ্য নেই। অস্ত্র, গোলাবারুদ আর অবশিষ্ট নেই। ফোর্সও টায়ারড হয়ে পড়েছে।
সামরিক কর্মকর্তারা শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা রেগে গিয়ে বলেন, তাহলে তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে ফেল এবং গণভবনে কবর দিয়ে দাও।
আরো পড়ুন: শেখ হাসিনার বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় ৩ আগস্ট
ওইসময় সামরিক কর্মকর্তারা শেখ রেহানাকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে রাজি করাতে অনুরোধ করেন। তারা এ কথাও বলেন যে, সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ডাকে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির কারণে গণভবন অভিমুখে ঢাকার চারপাশ থেকে মিছিল আসছে। এ পর্যায়ে শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে বড় বোন শেখ হাসিনার পা জড়িয়ে ধরেন রেহানা। কিন্তু শেখ হাসিনা রাজি হচ্ছিলেন না। পরে জয়ের সঙ্গে কথা বলেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। জয়কে বলা হয়, প্রাণে বাঁচাতে হলে তার মাকে পদত্যাগ করা ছাড়া উপায় নেই। টাইম একটা ফেক্টর। এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জয় পরিস্থিতি জানার পর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। অবশেষে জয়ের কথায় ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা টেলিভিশনে প্রচারের জন্য একটি ভাষণ রেকর্ড করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে সামরিক কর্মকর্তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীকে ব্যাগ গোছাতে ৪৫ মিনিটের সময় দেন। কারণ গণভবন অভিমুখে লাখ লাখ ছাত্র-জনতার যে মিছিল আসছে, সে সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে। ছাত্র-জনতার এই স্রোত ছিল ৩৬ দিনের অভাবনীয় আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ- ‘চব্বিশের বিপ্লব, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান’।