বাংলাদেশের ভেতরে কাঁটাতারের বেড়া, মুখোমুখি বিজিবি-বিএসএফ, উত্তেজনা তুঙ্গে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে গত দুদিন ধরে বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়, যখন বিএসএফ শূন্য রেখার কাছে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করে। বিজিবির বাধায় কাজ বন্ধ হলেও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই দিন বিকেলে এবং মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালেও দু’বার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
সীমান্তের পেছনের ঘটনা
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নোম্যানসল্যান্ড থেকে ৫০ গজ ভেতরে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ভারতের পক্ষ থেকে একটি কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয় প্রায় ছয় মাস আগে। ওই রাস্তার ওপর কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে গেলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
৫৯-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, সোমবার ভারতের মালদা জেলার কালিয়াচক থানার সবদলপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্ত ঘেঁষে বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়।
তিনি বলেন, বিএসএফের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন। এ বিষয়ে পতাকা বৈঠকে বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। তবে তারা কাজ বন্ধ করেনি।
সীমান্তে পরিস্থিতি ও স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
সীমান্তে উত্তেজনার কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান খাঁনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সতর্ক অবস্থানে থাকেন।
সীমান্তে বসবাসকারী স্থানীয় জনগণ বিএসএফের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। তাদের অনেকে বিজিবির সঙ্গে মিলিত হয়ে দিনব্যাপী সীমান্তে অবস্থান নেন। একইভাবে ভারতীয় নাগরিকদেরও বিএসএফের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কামাল উদ্দীন বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিএসএফ শূন্য রেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এরপর থেকেই উত্তেজনা চলছে। বর্তমান পরিস্থিতি
৫৯-বিজিবির অধিনায়ক জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত থাকলেও উভয় পক্ষই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের ভয়ের কোনো কারণ নেই।
বিএসএফের এ ধরনের কর্মকাণ্ড সীমান্ত চুক্তির পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উত্তেজনার বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা হওয়া জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।