×

জাতীয়

সাবেক পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও ওসি ডিবির বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৮ পিএম

সাবেক পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও ওসি ডিবির বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ

ছবি: ভোরের কাগজ

   

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) সাবেক পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম, তার প্রধান সহযোগী অতিরিক্ত কমিশনার দেলোয়ার হোসেন ও ওসি ডিবি জাহিদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অপকর্মের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী সৈয়দ রিয়াজুল করীম। 

বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে সৈয়দ রিয়াজুল করীম উল্লেখ করেন যে, অভিযুক্তরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অর্থ আত্মসাৎ এবং গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের নির্দেশে সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে দুই পা ভেঙ্গে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এই মানববন্ধনের মাধ্যমে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে মোল্লা নজরুল ইসলামসহ অভিযুক্তদের অপকর্মের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ রিয়াজুল করিম অভিযোগ করে বলেন, তার প্রতিষ্ঠান নীট সিটি লিমিটেড (সি-৩২/১, মোগরখল, গাজীপুর) এর ফ্যাক্টরির বিল্ডিং মালিকদের অবৈধ ঝুট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে তিনি বিজ্ঞ আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত শুনানি শেষে বিল্ডিং মালিকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বাড়ি ভাড়া বকেয়া থাকা নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মধ্যস্থতায় সমাধান হলেও তখনকার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী যুগ্ম কমিশনার মো. দেলোয়ার হোসেন এবং ওসি ডিবি জাহিদ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিল্ডিং মালিকদের সহায়তায় ফ্যাক্টরি তালাবদ্ধ করেন। 

তিনি আরো বলেন, কমিশনার মোল্লা নজরুল এবং তার সহযোগীরা তাদের কাছে দুই কোটি টাকা অবৈধভাবে দাবি করেন। এর মধ্যে শাহ নেওয়াজ নামের একজনের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা নেওয়া হয়। এরপরও ফ্যাক্টরি না খুলে বিল্ডিং মালিকদের সঙ্গে সালিশ করে ফ্যাক্টরি খুলে দেয়ার শর্তে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অবশেষে ওসি ডিবি জাহিদ সাহেব ৫০ লাখ টাকা গ্রহণ করার পর ফ্যাক্টরি খুলে দেন।  

সৈয়দ রিয়াজুল করিম অভিযোগ করেন, ফ্যাক্টরি খুলে দিতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তৎকালীন কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামকে বিষয়টি অবগত করেন। কমিশনার মোল্লা নজরুল এ বিষয়ে উপ-কমিশনার দেলোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে দেলোয়ার হোসেন ওসি ডিবি জাহিদের মাধ্যমে ১৭ মার্চ ২০২৩ তারিখ রাত ৯টায় তাকে ফোন করে ফ্যাক্টরি খুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং পরদিন সকাল ৮টায় ফ্যাক্টরিতে উপস্থিত হতে বলেন। ১৮ মার্চ ২০২৩ তারিখ সকাল ৯টায় ফ্যাক্টরির সামনে উপস্থিত হওয়ার পর সকাল ১০টার দিকে বিল্ডিং মালিক খাইরুল ইসলাম সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সৈয়দ রিয়াজুল করিমের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। হামলার পর তাকে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। 

স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত উত্তরা সিনসিন জাপান হাসপাতালে ভর্তি করে অপারেশন করা হয়। সৈয়দ রিয়াজুল করিম আরো অভিযোগ করেন, হামলার পর তার পরিবার বাসন থানায় অভিযোগ করলেও তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেননি। তার হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় ফ্যাক্টরির সব মালামাল, মেশিনারিজ, ফায়ার পাম্প এবং জেনারেটরসহ আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার সরঞ্জাম লুট করা হয়।  

সৈয়দ রিয়াজুল করিম জানান, তার কর্মচারী মো. রফিকুল ইসলাম থানায় অভিযোগ করার পরেও থানা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর পর, তিনি ১২ আগস্ট ২০২৪ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহোদয়ের কাছে ৫০ লাখ টাকা উদ্ধারের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের পর উপ-কমিশনার দেলোয়ার হোসেনের বন্ধু ইলিয়াস খান তার মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বিষয়টি সমাধান করতে তার সঙ্গে বসেন। দেলোয়ার হোসেন নিজে সরাসরি টাকা গ্রহণ না করলেও, তিনি বলেন যে, টাকা ফেরত দেয়া হবে এবং ফ্যাক্টরির মালামাল উদ্ধারের জন্য সহযোগিতা করা হবে। সৈয়দ রিয়াজুল করিম তার কথায় বিশ্বাস রেখে অভিযোগ তুলে নেন। কিন্তু পরে দেলোয়ার হোসেন এবং তার সহযোগীরা ৫০ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করেন এবং কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

এসময় মানববন্ধনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি গভর্ণর সৈয়দ আজমুল হকের সভাপতিত্বে সংহতি প্রকাশ করে করে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো: মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মনিরুল ইসলাম মনির, ঢালী মো. সুমন মাষ্টার, রাজু আহমেদ রাজ, শামীম শেখ, সৈয়দ আনিসুর রহমান টিটু সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App