গণমাধ্যমকে আরো শক্তিশালী করতে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধতা জরুরি: সংস্কার কমিশন প্রধান

বাবুল আকতার, খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
গণমাধ্যমকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধতা সব থেকে বেশি জরুরি। এ জন্য সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
কামাল আহমেদ বলেন, বিগত সময়ের রাজনৈতিক মাতাদর্শও কারণে যারা বিভিন্ন বৈষম্যেও শিকার হয়েছেন তাদেরকে সুষ্ঠু কাজ করার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে। সংস্কার কমিশনের প্রধান আরো বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন সকলের মতামত নিয়ে একটি যুগোপযোগী সুপারশিপত্র প্রেরণ করবে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর করবে। এর বাকি অংশ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাজনৈতিক দল বাস্তবায়ন করবে।
প্রধান অতিথি বলেন, গণমাধ্যমগুলো যাতে যথাযথভাবে তার ভূমিকা পালনে সক্ষম হয় তার উপযোগী নীতিমালা প্রণয়নে কমিশন সুপারিশ করবে। আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করে সাংবাদিকতার প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবে না। দেশে ব্যক্তি-ব্যবসায়িক স্বার্থে বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর জন্য সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহারের প্রবণতা প্রবল। দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ন্যূনতম একটি বেতনের নিশ্চয়তা থাকা দরকার। সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা যদি না থাকে, তাহলে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থাকবে না। ওয়েজবোর্ডের যে সুযোগ-সুবিধা তা ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা কার্যত প্রায় পান না, যারা পান তারা সৌভাগ্যবান।
তিনি আরো বলেন, সংবাদপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে আইন ও নীতিমালায় সম্পাদকের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার বিষয়গুলোসহ অনেক ইতিবাচক বিষয়বস্তু রয়েছে। তবে যারা অতীতে সরকার পরিচালনা করেছেন তারা নিজেরাই নীতিমালা অনুসরণ করেননি। যে কারণে এই সমস্যাগুলো হয়েছে। তারা তোষণকারীদের খুশি করার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পত্রিকার সার্কুলেশনের সংখ্যা বিষয়ক ডিএফপির মিডিয়া তালিকা তৈরিতে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক, গণমাধ্যমকর্মী আমরা সবাই দুর্নীতি ও নিয়মভাঙ্গার অন্যায়ের অংশীদার। সেই কারণেই আজকে এরকম একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টেলিভিশন-সংবাদপত্র মিডিয়ায় যাকে মফস্বলে রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়, তাকেই আবার বিজ্ঞাপন সংগ্রহের দায়িত্ব দেয়া হয়।
তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এর ফলে যারা চাকরিচ্যুত হয়ে বেকারত্বের শিকার হয়েছিলেন তারা ক্ষতিপূরণের দাবীদার হওয়ার যোগ্য। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।
মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য আখতার হোসেন খান, জিমি আমির, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন, বেগম কামরুন্নেসা হাসান সহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।