বিচারকরা সরকারের কাছে জিম্মি যে কারণে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধস্তন আদালতের বিচারকদের কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি ও শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। এই অনুচ্ছেদের কারণে বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠন থেমে আছে উল্লেখ করে অনুচ্ছেদটি 'অসাংবিধানিক' ঘোষণা চেয়ে করা রিটের ওপর শুনানি হয়েছে হাইকোর্টে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দা সাজিয়া শারমিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তামিম খান।
এসময় আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কারণে অধস্তন আদালতের বিচারকদের সরকারের কাছে জিম্মিদশায় থাকতে হয়। ১১৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অধস্তন আদালতের দায়িত্বপালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি দান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলাবিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকা কেন অসাংবিধানিক হবে না।
তিনি বলেন, বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না। রাতে কোর্ট বসিয়ে বিচারকদের সাজা দিতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটেছে। সরকারের পছন্দমতো আদেশ না দেয়ার কারণে আদেশের পরদিন বিচারককে বান্দরবানে পাঠানো হয়েছে। অনেক বিচারককে এ কারণে চোখের পানি ফেলতে দেখেছি। এই অনুচ্ছেদের কারণে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়ের স্বপ্ন স্থবির হয়ে রয়েছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট হাইকোর্টের ১০ জন আইনজীবী ১১৬ অনুচ্ছেদ অসাংবিধানিক ঘোষণা চেয়ে রিট করেন। রিট আবেদনে বলা হয়, অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকার কারণে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের সরাসরি হস্তক্ষেপ দেখা যায়, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করে। পরে ২৭ অক্টোবর, ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এদিন ওই রুলের ওপর শুনানি হয়।