শেষ মুহূর্তে জমজমাট বাণিজ্য মেলা

মরিয়ম সেঁজুতি
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
শেষ মুহূর্তে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বাণিজ্য মেলায়। রাজধানীবাসীর ঢল যেন এখন বাৎসরিক এ আয়োজনে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঠাসা ভিড়ে বিকিকিনিও জমজমাট। মেলার শেষ মুহূর্তে এসে ক্রেতাদের ভিড় সামাল দিতে ঘাম ছুটছে বিক্রেতাদের। গৃহস্থালি, আসবাবপত্র, প্রসাধনী, জুতা, শীতের কাপড়, শাড়ি, খেলনা, খাবার, হস্তশিল্প, জুয়েলারি— মেলার সব স্টলই ছিল লোকে লোকারণ্য।
ক্রেতাকে টানতে শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন কোম্পানির অফারের ছড়াছড়ি চলছে। ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কেনাবেচাও। দেশিও পণ্যের পাশাপাশি চাহিদা রয়েছে বিদেশি পণ্যেও। তবে দাম বেশি হওয়ায় চাহিদা মতো বিদেশি পণ্য কেনা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
এদিকে, ভ্যাট-ট্যাক্সের জন্যে স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি দাম চাইছেন বিদেশি বিক্রেতারাও। আর মাত্র ৫ দিন পরই পর্দা নামতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরের। শেষ মুহূর্ত এসে যেন ভিড়ও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। আর ছুটির দিন হলে তো সেই ভিড় ছাড়িয়ে যায় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি।
ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকাতে থেকেই মূলত বেশি দর্শনার্থী ভিড় করেন। কেউ পরিবার আবার কেউ প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হচ্ছেন। কেনাকাটার পাশাপাশি নিজেদের মুহূর্তগুলো ফ্রেম বন্দি করতেও ভুলছেন না তারা। এর বাইরেও পছন্দের পণ্য সুলভ মূল্যে পাওয়ার আশায় অনেকই আসছেন বাণিজ্য মেলায়।
বাণিজ্য মেলা মানেই বাহারি পণ্য আর মূল্য ছাড়ের ছড়াছড়ি। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ও আয়োজকদের থাকে নানা উদ্যোগ। এবার দেশি পণ্যের পাশাপাশি ক্রেতাদের চাহিদার তালিকায় রয়েছে কার্পেট, শাল, বাহারি বাতি, গৃহস্থালি সাজসজ্জার বিদেশী পণ্য। তবে, উচ্চ মূল্যের কারণে এসব পণ্য চাহিদা মতো কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। তাদের দাবি মূল্যছাড় থাকার পরও যে দাম আসে তা অনেকটাই নাগালের বাইরে। ফলে এসব বিদেশি স্টল থেকে অনেকই ফিরছেন খালি হাতে।
মেলায় আগত দর্শনার্থীরা জানান, বাণিজ্য মেলায় প্রায় সব কোম্পানিই অংশ নেয় বলে প্রতিটি কোম্পানিই চেষ্টা করে নতুন নতুন ডিজাইনের পণ্য নিয়ে আসতে। তাদের পর্যবেক্ষণ, মেলায় এমন অনেক পণ্যই থাকে যেগুলো বছরের অন্য সময় পাওয়া যায় না। নতুন ডিজাইনের হওয়ায় এসব পণ্যের চাহিদা বেশি। তাই স্টক শেষ হওয়ার আগেই ক্রেতারা তা কিনে নিচ্ছেন। আর মেলায় প্রতিযোগিতামূলক দামের বিষয়টিও মাথায় সব ক্রেতাদেরই।
মেলায় প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাগম থাকলেও তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সব স্টলেই মানুষের ভিড় থাকলেও গৃহসামগ্রীর স্টল ও প্যাভিলিয়নে ভিড় ছিল একটু বেশিই।
দেশি-বিদেশি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানগুলোও পিছিয়ে ছিল না এ ক্ষেত্রে। মেলা-ফিরতি মানুষের হাতেও গৃহস্থালী পণ্যই বেশি দেখা গেছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য, প্রেশার কুকার, জুস মেকার, জুস ব্লেন্ডার, ওভেন, রাইস কুকার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যান প্রভৃতি।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মেলার শুরু থেকেই স্টলগুলোতে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় ও অফারের ছড়াছড়ি থাকলেও শেষদিকে এসে তা আরো বেড়েছে। স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো যেন ছাড়ের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
এদিকে, বিদেশি বিক্রেতারা দাবি করছেন, ক্রেতারা দোকানে ভিড় করলেও সেভাবে পণ্য কিনছেন না। তবে, ভ্যাট ট্যাক্সের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি দাম মানছেন তারাও।
তবে, মেলার বাকি দিনগুলোতে ক্ষতি কাটিয়ে ভালো বেচাকেনা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন এসব বিদেশি দোকানিরা। যদিও এবারে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছে ৩৬২টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্তোরাঁ। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে মাত্র ১১টি।