সাত কলেজ নিয়ে অচলাবস্থা, সমাধানের পথ ভেবে পাচ্ছেন না শিক্ষা উপদেষ্টা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫৬ পিএম

শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চলমান সংকট সমাধানে এখনো কোনো কার্যকর পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ইনোভেশন ডায়লগ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে সাত কলেজের অধিভুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং এ বছর থেকেই ভর্তির সুযোগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই নেয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। ফলে সংকট আরো জটিল হয়েছে।
গত রবিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন। এর অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ সেশন, অর্থাৎ চলতি বছর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধের কথা বলা হয়।
চলতি শিক্ষাবর্ষে এসব কলেজে ভর্তি আহ্বান করা হবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, আমার একার মাথায় তো এই বুদ্ধি এখন আসবে না। এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার মধ্যে ইউজিসির মাধ্যমে সাত কলেজে ভর্তি নেয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ইউজিসি তো বিশ্ববিদ্যালয় না, ইউজিসির ভর্তি করার কোনো ক্ষমতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হতে গেলে সনদপ্রাপ্ত হতে হয়, এর আগে ভর্তি করানো সম্পূর্ণ বেআইনি।
গত আগস্টে ক্ষমতায় পালাবদলের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছিলেন, অধিভুক্তির কারণে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় ভুগতে হয় তাদের। নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে তারা নানা সমস্যায় পড়েন। সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে আনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, তিন মাস আগেই তিনি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করে- বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমপর্যায় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো তৈরি করার কথা বলেছিলেন। ৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে তো অনেক বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়, এগুলোতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আছে। সাধারণ বিশ্বিবদ্যালয়ে এইচএসসি শিক্ষার্থীরা থাকে না। এগুলোর শিক্ষকরা বিসিএস ক্যাডারের। কাজেই অনেকগুলো মডেল বিবেচনায় আছে। এ নিয়ে বড় কমিটি হয়েছে, যেটা ইউজিসির নেতৃত্বে হয়েছে। ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।
তিনি বলেন, এই কলেজগুলোকে সমন্বিত করে একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করলে গেলে, এটা তো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নকল করে হবে না। নতুন মডেল তৈরি করতে হবে, সেটার কাজ চলছে।