ঢাবির জগন্নাথ হলে ৭৪টি মন্ডপে হবে পূজা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে পূজিতা হন জ্ঞান, বিদ্যা, কলা, ও শুদ্ধতার প্রতীক দেবী সরস্বতী। সাধারণত একদিনই অনুষ্ঠিত হয় এই পূজা। তবে এবছর পূজার তিথি পড়েছে দুই দিন। আর তাই সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে রবিবার ও সোমবার।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, পঞ্চমী তিথি শুরু হবে, রবিবার সকাল ৯ টা ১৬ মিনিটে। আর পঞ্চমী তিথি শেষ হবে সোমবার সকাল ৬ টা ৫৩ মিনিটে।
হিন্দু শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, চতুর্ভূজা ব্রহ্মার মুখ থেকে আভির্ভূতা শুভ্রবর্ণা বীণাধারিণী চন্দ্রের শোভাযুক্ত দেবীই হলেন সরস্বতী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। তিথিটি শ্রী পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত।
অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাবেন ভক্তরা। দেশের বিভিন্ন মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বাড়িতে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনের কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপে প্রতিবারের মতো এবারো সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে সোমবার। আর রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে রবিবার ও সোমবার দুই দিনই পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন হলে সাড়ম্বরে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল ভোরের কাগজকে জানান, হলের মাঠে কেন্দ্রীয় উপাসনালয়, চারুকলা অনুষদ, বিভিন্ন বিভাগ এবং হলে অবস্থানরত কর্মচারীদের সন্তানদের আয়োজনসহ এবছর ৭৪টি মণ্ডপে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। জগন্নাথ হলেও পূজা অনুষ্ঠিত হবে সোমবার। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জগন্নাথ হলের পুকুরে দৃষ্টিনন্দন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা স্থাপন করেছে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। কল্যাণময়ী, ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দেবী সরস্বতীর আরাধনা করেন। সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্র বসনা। দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এজন্য তাকে বীণাপানিও বলা হয়। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবী তার আশীর্বাদের মাধ্যমে মানুষের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করতে প্রতি বছর আবির্ভূত হন ভক্তদের মাঝে।
সনাতন ধর্মীয় রীতিতে পঞ্চমী তিথীর প্রত্যুষে দেবীকে দুধ, মধু, দই, ঘি, কর্পূর ও চন্দন দিয়ে স্নান করানো হয়। এরপর চরণামৃত নেন ভক্তরা। তাদের বিশ্বাস, দেবী খুশি হলে বিদ্যা ও বুদ্ধি অর্জিত হবে। দেবীর বন্দনা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় আছে- পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, শিশুদের হাতেখড়ি, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি।