কমিশনের প্রস্তাব: সংসদের মেয়াদ ৪ বছর, দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী নয়

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
একজন ব্যক্তি জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন এবং সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে—এমন সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রকাশ করেছে সরকার।
১৪৪ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ চার বছর করে নির্ধারণ করা হবে এবং প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক দলের প্রধান বা সংসদ নেতা হতে পারবেন না। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, এই সুপারিশ প্রস্তুত করতে গিয়ে প্রায় এক লাখ মানুষের মতামত নেয়া হয়েছে। কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি ৩২ জন গবেষক এতে কাজ করেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনদের অগণতান্ত্রিক প্রবণতা ও ফ্যাসিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ১৯৭২ সালের সংবিধানের ‘দুর্বলতাকে’ দায়ী করা হয়েছে। কমিশনের মতে, ফ্যাসিবাদের বীজ ৭২ সালের সংবিধানের মাঝেই নিহিত ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরবর্তীকালের অগণতান্ত্রিক প্রবণতা ও শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের বীজ ৭২ সালের সংবিধানের মাঝেই নিহিত ছিল। এরই ফলাফল হলো প্রতিটি আমলেই ক্ষমতার পুঞ্জীভবন আরো ঘনীভূত হয়েছে, আমলাতান্ত্রিকতা আরো প্রকট রূপ পেয়েছে, বিচার বিভাগ ক্রমে বেশি বেশি হারে দলীয়করণের শিকার হয়েছে, জবাবদিহির অভাবে ক্ষমতাসীনদের আর্থিক দুর্নীতি আরো প্রবল চেহারা নিয়েছে।
একইভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা দল, রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশকে রুদ্ধ করেছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ধ্বংস করেছে। এভাবে ১৯৭২ সালে একজন একক ব্যক্তি ও একটি দলকে কেন্দ্রে রেখে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত উত্তরোত্তর স্বৈরতন্ত্রী চেহারা ধারণ করতে করতে অবশেষে বাংলাদেশজুড়ে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে।