ভারতকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ: সীমান্ত হত্যার অভিযোগ তদন্ত করুন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:৫৮ পিএম

বিএসএফ। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) নির্যাতনের নতুন অভিযোগের ঘটনার তদন্ত এবং জড়িতদের শাস্তির আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, ১০ বছর আগে ভারত সরকার বিএসএফকে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারীদের বিরুদ্ধে কিছুটা নমনীয় হতে এবং প্রাণঘাতী গুলির পরিবর্তে রাবার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে দুই দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের ওপর বিএসএফ এখনো নিপীড়ন, বিচারবর্হিভূত হত্যা, নির্যাতন এবং দুর্ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে। খবর বিবিসি’র
গরু পাচার, চোরাচালান এবং অবৈধ সীমান্ত পারাপার বন্ধ করতে মোতায়েন করা ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী সবসময় দাবি করে আসছে, শুধু হামলার স্বীকার হলেই তারা শক্তি ব্যবহার করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, "ভারতীয় সরকার বিএসএফকে নমনীয় হয়ে গুলি ব্যবহার না করার যে নির্দেশ দিয়েছিল তা নতুন করে হত্যা, নির্যাতন এবং অন্য মারাত্মক ধরণের নির্যাতন রুখতে পারেনি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ভারত সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে সংযমী হতে এবং বেআইনি হত্যা বন্ধের নির্দেশ জারি করেছিল এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার সময় ভারত দেশটিকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের আশ্বাসও দিয়েছিল।
এদিকে বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা অধিকারের দেওয়া এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গত দশ বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ৩৩৪ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ৫১ জনকেই হত্যা করা হয়েছে ২০২০ সালে।
ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা মাসুম ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএসএফ'র হাতে ১০৫টি হত্যার তদন্ত করেছে, তারা বলছে যে, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে।
বাংলাদেশ বরাবরই সীমান্তে নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ করে আসছে। গত অগাস্টে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলে, "বাংলাদেশ বিষয়টিতে সব ধরণের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছে।"
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নির্যাতনের ঘটনায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বিএসএফের কোন সদস্যকে জবাবদিহি করার কোন ঘটনা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানতে পারেনি বলে বিবৃতিতে অভিযোগ তোলা হয়।
এর মধ্যে বহুল আলোচিত ১৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানি খাতুন হত্যার ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারানোর পর কাঁটাতারে ঝুলে ছিল।
২০১৫ এবং ২০১৩ সালে বিএসএফের বিশেষ আদালতে দুই দফা বিচারের পর বিএসএফের অভিযুক্ত কনস্টেবলকে খালাস দেয়া হয়। এ মামলায় নতুন করে বিচারের আবেদনটি এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে।