বঙ্গবন্ধুর চার মূলনীতি এখন হারানো দিনের গান: সৈয়দ আনোয়ার হোসেন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২১, ০৫:৩৭ পিএম

শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত “বঙ্গবন্ধু ও চার মূলনীতি” অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: ভোরের কাগজ

বঙ্গবন্ধুর চার মূলনীতি এখন হারানো দিনের গান বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার, ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে বলেন, বাংলাদেশ হবে একটি আদর্শ রাষ্ট্র, ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা। পরে জাতীয়তাবাদ যুক্ত করে চার মূলনীতি নীতি নির্ধারণ করা হয়।
তিনি বলেন, একদিকে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম, অপর দিকে ধর্ম নিরপেক্ষতা এক সঙ্গে যায় না। রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না।
শনিবার (১৩ মার্চ) সকাল ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু ও চার মূলনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু সমাজতন্ত্র বলতে শোষণহীন সমাজের কথা বলেছেন। বাইরে থেকে আরোপিত সমাজতন্ত্র নয়, দেশের মধ্য থেকেই এই সমাজতন্ত্রের উদ্ভব হবে। তিনি গণতন্ত্রের সজ্ঞায়িত করেন শোষিতের গণতন্ত্র হিসেবে। অন্যদিকে জাতীয়তাবাদকে বাঙালির অনুভূতির প্রকাশ বলে বলেছেন। সব সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বার স্বীকৃতি দিয়েই বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটবে।
[caption id="attachment_270952" align="aligncenter" width="700"]
এ ইতিহাসবিদ আরও বলেন, যাত্রার শুরুতে আলো থাকলেও এখন আমরা আলো-আধারিতে রয়েছি। ২০১৯ সালে সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনা করা হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনার অধিকার কারো নেই। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে তার এই রাষ্ট্র চিন্তাকেই অনুসরণ করতে হবে।
সভাপতির ভাষণে পার্টির সভাপতি জননেতা রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। কিন্তু চরম বৈষম্য উন্নয়নকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, তাকে বাধাগ্রস্থও করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ধনী সৃষ্টির কারখানা কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেষদিন পর্যন্ত শ্রমিক-কৃষক মেহনতি মানুষের শোষন-বৈষম্যর অবসান ও তাদের হাসি ফুঁটাবার কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তাকে অনুসরণ করলে বাংলাদেশ একটি আর্দশ রাষ্ট হতে পারে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি অভিযোগ করেন, মুজিব বর্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর যে ভাষণ প্রচার করা হয় তাতে ধর্মের নিরপেক্ষকতা ও সমাজতন্ত্র সম্পর্কে বক্তব্য কেটে বাদ দেওয়া হয়েছিলো। এ ব্যাপারে পার্লামেন্টে প্রশ্ন করলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি। বঙ্গবন্ধুর চার মূলনীতি বাদ দিলে দেশের অস্তিত্বই থাকে না।
সভার শেষে গণসাংস্কৃতিক মৈত্রী আন্তর্জাতিক সঙ্গীত ও গণসংগীত পরিবেশন করেন।