ঐতিহাসিক সফরে ঢাকায় নেপালের প্রেসিডেন্ট

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২১, ১০:১৯ এএম

সোমবার সকালে বিমানবন্দরে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত

সোমবার সকালে বিমানবন্দরে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ছবি: পিআইডি।

বিমান থেকে নামার সময় নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারীকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ছবি: পিআইডি।

বিমানবন্দরে নেপালের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হচ্ছে। ছবি: পিআইডি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী। সোমবার (২২ মার্চ) সকাল ১০টায় নেপালের রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী নেপাল এয়ারলাইনসের স্পেশাল ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ সময় ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে নেপালের রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানানো হয়। পরে তাকে তিন বাহিনীর সমন্বয়ে একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
ঐতিহাসিক সফররত নেপালের রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাতে স্বাস্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, আইজিপিসহ পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
[caption id="attachment_273011" align="aligncenter" width="742"]
সকাল ১১টা ১০মিনিটের দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। এসময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুন সুর বেজে উঠে। পরে নেপালের প্রেসিডেন্ট স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি পদ্ম ফুলের চারা রোপণ করেন এবং পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।
এ উপলক্ষে রাজধানী জুড়েই বেশ কিছু রাস্তায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকবে। এতে সাধারণ জনগণের চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটতে পারে।
সফরসূচী অনুযায়ী বিকেলে প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপরে তিনি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও নেপালের শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি সাংস্কৃতিক পর্বেরও আয়োজন করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় নেপালের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। উভয় রাষ্ট্রনেতার উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
[caption id="attachment_273013" align="aligncenter" width="742"]
এবার ট্রানজিট ও প্রটোকল চুক্তিতে ‘অপারেশনাল লাইজেশন অব রহনপুর-সিঙ্ঘাবাদ রেলওয়ে ট্রানজিট’ চুক্তির বিষয়টি নতুন করে সংযোজন করা হতে পারে। এতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর-ভারতের মালদহের সিঙ্ঘাবাদ সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন নেপালের বিরাটনগর পর্যন্ত যাবে। মাঝে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করবে নেপাল। বর্তমানে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ট্রানজিট ও প্রটোকল চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় নেপালকে ৬টি পোর্ট অব কল দেয়া হয়। এগুলো হলো চট্টগ্রাম বন্দর, মোংলা বন্দর, বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, বিরল ও চিলাহাটি। এসব পোর্ট অব কলে নেপালের যানবাহন পণ্য পরিবহন করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাবান্ধা ছাড়া আর কোনো বন্দর দিয়ে নেপালে নিয়মিত পণ্য আসা-যাওয়া করে না।
দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে। চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলোতে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন খাত, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হবে। আজ রাতেই রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ নেপালের প্রেসিডেন্ট এবং তার প্রতিনিধিদলের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতিরা আসছেন। এর আগে ১৮ মার্চ প্রথম অতিথি হিসেবে আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। ১৯ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃতীয় দিনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। ২০ মার্চ বাংলাদেশে আসেন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন।