জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মুনিয়ার বোনের জিডি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ মে ২০২১, ১০:৫৬ পিএম

জিডির কপি

মোসারাত জাহান মুনিয়া ও বড়বোন নুসরাত জাহান। ফাইল ছবি
বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ক্রমাগত হুমকি আসায় জীবন সংশয়ের আশঙ্কা করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান।
গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানী গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষার্থী মুসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মুনিয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন বড় বোন নুসরাত জাহান। এর পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনিও তার পরিবার। এ পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১ মে) কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এ জিডি করেন নুসরাত জাহান।
জিডিতে কয়েকটি মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, এসব নম্বর থেকে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মামলার পর থেকেই এসব নম্বর থেকে বারবার বলা হচ্ছে, সমঝোতার মাধ্যমে এর সুরাহা না করলে পথে-ঘাটে চলাফেরার সময় যেকোনো জায়গায় তার এবং তার িপরিবারের সদস্যদের উপর হামলা হতে পারে। এমনকি তার ও তার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরনের ক্ষতি ও প্রাণনাশও করা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে তিনি জানমালের নিরাপত্তা চেয়েছেন সরকারের কাছে।
[caption id="attachment_281807" align="aligncenter" width="523"]
আনভীরের স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য বিমান ভাড়া করে দুবাই যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কেউ যাবে কেউ আসবে, এটাতে কোনো আপত্তি নেই।’
এর আগে ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাটে নুসরাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ৬টি ডায়েরি। উদ্ধার হওয়া সেই ডায়েরিগুলোতে সরাসরি সুইসাইড নোট না থাকলেও আসামি বসুন্ধরার এমডি আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং সম্পর্কের স্বীকৃতি আদায় নিয়ে নানা বর্ণনা আছে বলে জানান তিনি।
সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ডায়েরিতে বিভিন্ন দিনের যে চিত্র আছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে তার ভেতরে মানসিক দ্বন্দ্বের যে উদ্ভব সেটা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি। সরাসরি সুইসাইডাল নোট না লিখলেও তার প্রচণ্ড মানসিক কষ্টগুলো ছিল সেগুলো এখানে ফুটে উঠেছে। মুনিয়ার দেহে হত্যার মতো কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা তদন্ত করা হচ্ছে।
মুনিয়ার পরিবারের দাবি এটি হত্যাকাণ্ড। সুরতহালের সময় উপস্থিত থাকা তার বোনের দাবি, আত্মহত্যার কোনো আলামত তিনি দেখেননি।
মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বলেন, একটা মানুষ যদি ফাঁস দেয় তাহলে হাত-পা ছুড়াছুড়ি করলে টুলটা পড়ে যাওয়ার কথা কিন্তু টুলটা পড়েনি। টুলের দু’পাশে তার পা ঝুলে রয়েছে আর পা বাঁকানো ছিল এবং বিছানাও পরিপাটি ছিল। উনি এখনো দেশে থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন কেন তাকে গ্রেফতার করতে পারছে না, এটা সবাই জানতে চায়।
এদিকে মুনিয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার আসামি সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এ ছাড়া আনভীরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন কর্মসূচি পালন করছে।