সালাহউদ্দিনের দুঃখ প্রকাশ
এস আলমের গাড়িতে ওঠা অনিচ্ছাকৃত ভুল

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ পিএম

সালাউদ্দিন আহমেদ
আলোচিত ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের গাড়ি চড়ে সংবর্ধনা দিতে যাওয়া অসাবধানতা ও অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল দাবি করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে গত ২৮ আগস্টের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, গাড়ি সংক্রান্ত যে সংবাদটা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে জনমনে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তারপরেও একটি পুরাতন গাড়ি আমার ছোট ভাই নিয়ে গেছে, সে খুব আনন্দিত যে আমি তার গাড়িতে উঠেছি। যদি জানতাম যে, এটা কোম্পানির গাড়ি, তাহলে হয়ত আমি সাবধনতা অবলম্বন করতাম।
তারপরেও আমার এই অসাবধানতা এবং এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য যদি দেশবাসীর মনে কষ্ট দিয়ে থাকি এবং অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকি সেজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
চট্টগ্রামের এস আলমের মালিকানাধীন গাড়িতে চড়ে গত ২৮ আগস্ট নিজ এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা নিতে যান সালাহউদ্দিন আহমেদ। কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে গাড়ির বহর নিয়ে পেকুয়ায় যান তিনি, যার বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
আরো পড়ুন: বিএনপি নেতা বাচ্চুকে বহিষ্কার
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যে গাড়িতে (জিপ) চড়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার থেকে পেকুয়ায় আসেন, সেটির নম্বর চট্টমেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩। তিনি সামনের সিটে বসে হাত নেড়ে আশপাশের লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিতসুবিশির স্টেশন ওয়াগন ব্র্যান্ডের জিপটি এস আলম গ্রুপের।
ঘটনার পূর্বাপর তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, গতকালকে (শনিবার ১ সেপ্টেম্বর) কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, আমি দীর্ঘ ১০ বছর পর আমার নিজ জেলা কক্সবাজারে অবতরণ করলে সেখানে আমার দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে একটি গাড়ি আমি ব্যবহার করেছি, যে গাড়ি একটি কোম্পানির, যা সংবাদে লেখা হয়েছে এস আলম কোম্পানির।
তিনি বলেন, আমি কোন গাড়িতে উঠেছি সেটা আমি নিজেও জানতাম না। সেইদিন কক্সবাজার বিমানবন্দরে নামার পরে কিছু গাড়ি দেখেছি ভেতরে। আমাদের নেতাকর্মীরা বলল যে, এটাতে উঠেন, ওই গাড়িতে আমি উঠেছি। তা সেই গাড়িটি কার, সেই মুহূর্তে আমি চিন্তাভাবনার মধ্যে ছিলাম না। আমি তখন অনেকটা আবেগাপ্লুত ছিলাম, আমার দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছিলাম এবং মনের মধ্যে মা-বাবার কবর জিয়ারতের বাসনায় মগ্ন ছিলাম। তখন আমার মনের অবস্থা ছিল না যে, আমি কোন গাড়িতে কার গাড়িতে উঠছি।
আরো পড়ুন: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্রেপ্তার
বিএনপির এই সিনিয়র নেতার বক্তব্য- সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পরে আমি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করলাম, আমি জানতে পারলাম, গাড়িটি আমার এলাকার এক ছোট ভাইয়ের যে, উক্ত কোম্পানিতে (এস আলম) বিভিন্ন জমি-জমা দেখাশোনার কাজ করে এবং কোম্পানি থেকে তাকে বিভিন্ন সময়ে ব্যবহারের জন্য গাড়িটি দেয়া হয়। সেও অন্য সবার মতো আমাকে বরণ করার জন্য এয়ারপোর্টে গেছে, তার গাড়িতে করেই গেছে। সেও জানত না যে, আমি তার গাড়িতে উঠব। আমিও জানতাম না যে, আমি কার গাড়িতে উঠব। এটা জেলা বিএনপির নেতারা ঠিক করেছে।
সালাহউদ্দিন বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যা কিছু, এগুলো পরিহার করলে আমার মনে হয় ভালো হয়। তারপরও আমার অসাবধনতার জন্য আমি আবারো দুঃখ প্রকাশ করছি।
একটি গণমাধ্যমে গাড়িচালক আপনার পরিচিত বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এই কথা আমি ওই পত্রিকার রিপোর্টারকে বলিনি। এটা কিভাবে লিখেছেন আমি জানি না। এটা মিস কোট করা হয়েছে।
ওইখানে একটা মাইক্রোবাস ছিল, যার ড্রাইভার আমার এলাকার ছিল। আমি মনে হয় ওই গাড়িতে উঠতে চেয়েছিলাম যে আমার পরিচিত। মাইক্রোবাসের উপরে হুড খোলা নেই বলে আমাকে সেই গাড়িতে উঠতে তারা দেয়নি। হয়তবা এগুলো বলতে গিয়ে পত্রিকার রিপোর্টার আমার বক্তব্য মিস কোট করেছেন।