শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপিতে ঘটা আলোচিত যত ঘটনা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তন শুরু হয়েছে। সরকারের পতনের পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকায় বিএনপির অনেক নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দলের ভেতরে কোন্দল এবং এসব অপরাধের জন্য বিএনপি হাইকমান্ড বেশ কিছু নেতাকে বহিষ্কার, শোকজ এবং পদ স্থগিত করেছে।
দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর হাতিরঝিলে প্রপার্টি বিরোধ নিয়ে একজনকে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার। এ ঘটনায় বিএনপি রবিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রামের বিএনপির দক্ষিণ জেলা শাখার ৩ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদকেও এ শিল্প গ্রুপের গাড়ি ব্যবহারের কারণে শোকজ করা হয়েছে।
দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকেও পনেরো আগস্ট নাটোরে দলীয় আদর্শবিরোধী বক্তব্যের অভিযোগে শোকজ করা হয়। তার জবাব দেয়ার পর দুলুকে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সরিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়।
ঢাকা উত্তরের বিএনপির কমিটি ভেঙে দেয়া নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। কমিটির দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে।
ফরিদপুরের নগরকান্দায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এক কর্মী হত্যার ঘটনায় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনের দলীয় পদও স্থগিত করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ বিভিন্ন অভিযোগে দলের বিভিন্ন স্তরের এক হাজারের বেশি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারশোরও বেশি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এবং অন্তত ২০ জনের পদ স্থগিত করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম মনে করেন, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের সংস্কৃতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এবার আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপির কিছু নেতার দ্বারা সেই একই প্রবণতা প্রকাশিত হয়েছে। তবে দলটি কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ইতিবাচক।
আরো পড়ুন: ডেঙ্গুতে এক দিনে ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬৬০
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে সবকিছুতে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। কোনো নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’