দেশে-বিদেশে কোথাও হদিস মিলছে না ওবায়দুল কাদেরের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আমরা এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে মরব, পালাব না। কোথায় পালাব! পালাব না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক জনসভায় ওবায়দুল কাদের সেই বক্তব্য দেন। সেসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেড় বছরে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনায় অনেক পানি গড়িয়েছে। বিএনপির আন্দোলন নস্যাৎ করে গত ৭ জানুয়ারি একতরফা ভোট করে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
কিন্তু গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে সরকারের। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের কোথায়, তার কোনো হদিস নেই। শারীরিকভাবে আত্মগোপনে। নেই ভার্চ্যুয়াল দুনিয়াতেও। সরকার পতনের আগে তিনি প্রায় প্রতিদিন বক্তব্য-বিবৃতি দিতেন। কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য গত ২ মাস ১০ দিন ধরে তার কোনো বক্তব্য-বিবৃতি নেই।
এর মধ্যে ওবায়দুল কাদেরের ‘পালাব না’ বক্তব্য নিয়ে গান তৈরি হয়েছে, যা ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এছাড়া তার নানা বক্তব্য নিয়ে ‘মিম’ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সাবেক মন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিও নিয়ে ‘প্যারোডিও’ হচ্ছে। সরকার পতনের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের বেশির ভাগ নেতা দেশ ছেড়েছেন। তাদের বড় অংশই ভারতে অবস্থান নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মাঝারি এবং সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাও প্রতিবেশী দেশটিতে ঠাঁই নিয়েছেন।
অনেক নেতা বিদেশে থেকে গণমাধ্যমকর্মী, দেশে-বিদেশে থাকা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কমবেশি যোগাযোগ রাখছেন। তবে তাদের কেউ ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এমনকি তিনি কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, এমন তথ্যও নেই কারো কাছে। তার ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এর পর থেকে তার সঙ্গে কারো যোগাযোগ হয়েছে, এমন তথ্য নেই।
আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের যেকোনোভাবে গণমাধ্যমের প্রচারের আলোয় থাকতে পছন্দ করতেন। কী পরিস্থিতিতে তিনি গত আড়াই মাস গণমাধ্যম ও নেতা-কর্মীদের থেকে দূরে আছেন, তা তিনিই ভালো জানেন। তবে তাদের এসব বক্তব্য নিয়েও দেশে থাকা দলের কোনো কোনো নেতা-কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বিদেশে থেকে সরকারকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে বক্তব্য দেয়ার কারণে দেশে থাকা নেতা-কর্মীদের বিপদ বাড়ছে।
ওবায়দুল কাদের নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সর্বশেষ পোস্ট দেন গত ৫ জুলাই। ওই দিন তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়া-১ নামের এলাকায় নানা ভঙ্গিমায় নিজের ১২টি ছবি পোস্ট করেন। তাতে ১ লাখের বেশি লাইক, লাভ, হা হা রিয়েক্ট হয়। এর মধ্যে ৫২ হাজারের মতো হা হা রিয়েক্ট। কমেন্ট করেন ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ। শেয়ার হয় সাড়ে ৭ হাজারের বেশি। এরপর আর কোনো পোস্ট নেই ওই পেজে।