আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভা থেকে বাধ্য হয়েছিলেন পদত্যাগ করতে: সোহেল তাজ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৪ পিএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-তাজ উদ্দিন আহমেদ-সোহেল তাজ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের পুত্র সোহেল তাজ বলেছেন, ১৯৭৪ সালে আমার বাবা তাজউদ্দীন আহমদ বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভা থেকে বাধ্য হয়েছিলেন পদত্যাগ করতে। সেই সময় কাপাসিয়ায় যেসব নেতা ছিলেন, যারা তাজউদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন। সেই গোষ্ঠীকে আবার সক্রিয় করা হয়েছিল আমার বিরুদ্ধে। আমি যেই ‘লিগ্যাসি ক্যারি’ করছি, এই লিগ্যাসির একটা ইতিহাস আছে। সেটা চলে আসছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। এটা টানলে চলে আসবে মুক্তিবাহিনী এবং মুজিব বাহিনী। এটা টানলে চলে আসবে ১৯৭১ সালে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা। সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোহেল তাজ বলেন, ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করল বাংলার বুকে। আমার বাবা গিয়েছিলেন ৩২ নম্বরে। বঙ্গবন্ধুর কাছে এবং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার একটা ঘোষণা দেয়ার কথা ছিল স্বাধীনতার। আমার বাবা সেই কাগজটিতে স্বাক্ষর করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে বারবার অনুরোধ করেছিলেন। একপর্যায়ে তিনি সেটা না করাতে আমার বাবা বাসায় চলে আসেন। আমার মায়ের মুখ থেকে শুনেছি, আমার বাবা খুব উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তিনি খুব হতাশ হয়েছিলেন। বাসায় এসে সব ফাইলটাইল ছুড়ে বলেছিলেন এই ২৩ বছরের আন্দোলন বৃথায় গেল, সবকিছু নষ্ট হয়ে গেল। আমরা দেখেছি যে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গেলেন। বিষয়টি খুব মজার, তাজউদ্দীন আহমদ যখন সিদ্ধান্ত নিলেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সরকার গঠন করে যুদ্ধটা পরিচালনা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। তখন আমরা দেখেছি একটি গোষ্ঠী বিরোধিতা করেছিল।
এই গোষ্ঠীটি বলতে কে কে ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে শেখ মনির নেতৃত্বে ছাত্র নেতারা ছিলেন এবং আমরা যতটা জানি তারা একটা গোয়েন্দা সংস্থার ছত্রছায়ায় অ্যাক্টিভিটিসগুলো করেছিলেন। আমরা জানি মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। কিন্তু মুজিব বাহিনীকে ট্রেনিং দিয়েছিল ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা)। আমরা জানি ৯ মাসের ইতিহাসে মুজিব বাহিনী এবং মুক্তি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল বেশ কয়েকবার। এটা কেন? এটা একটা প্রশ্ন। আমার প্রত্যাশা ইতিহাসবিদরা এটাকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করবেন এবং সঠিক ইতিহাস আমাদের জানতে হবে। কার কী ভূমিকা ছিল? আমার বাবা মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত দুঃখ করে বলেছিলেন- মুজিব ভাই একবারও জানতে চাইলেন না কীভাবে আমি যুদ্ধটা (মুক্তিযুদ্ধ) পরিচালনা করলাম!