আমরা জনগণের ইস্পাত কঠিন ঐক্য চায়: জামায়াত আমির

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতীয় ইস্যুতে সকল জনগণের ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রয়োজন। তিনি বলেন, এ দেশ কারো একার নয়, সবার। দেশ এখনো ১৫ বছরের জঞ্জালমুক্ত হয়নি। তাই সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতের উদ্যোগে স্থানীয় ইস্টার্ন জুট মিলস শ্রমিক ময়দানে কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, আমরা একটা মর্যাদাশীল বাংলাদেশ চাই। যে বাংলাদেশ বিদেশে সবাইকে বন্ধু হিসেবে দেখবে। কাউকেই প্রভু মেনে নেবে না। আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করবে না। যেদিকে হাত বাড়াব, সেদিকে বন্ধুর হাত পেতে চাই। কোনো আগ্রাসীর হাত আমরা দেখতে চাই না।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের দুটি দেশপ্রেমিক সংস্থাকে ধ্বংস করেছে। প্রথমেই তারা বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এরপর জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে ও কারাগারে রেখে তিলে তিলে হত্যা করে। তাদের সে অত্যাচার-নির্যাতনের জবাব এ দেশের শান্তিকামী ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দিয়েছে।
সম্মেলনে জামায়াতের আমির আরো বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা এখনো দেশকে অস্থিতিশীল করতে উস্কানি দিচ্ছে। তবে সেই ফাঁদে কোনোভাবেই পা দেয়া যাবে না। যতই ষড়যন্ত্র হোক, তা ব্যর্থ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশ এখনো জঞ্জাল ও স্বৈরাচারমুক্ত হয়নি। তাই জাতীয় প্রয়োজনে জনগণের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
সাংবাদিকদের প্রতি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্যটা হুবহু নেবেন। আমাদের বক্তব্যের নামে আপনাদের কোনো বক্তব্য আমাদের ওপর চাপাবেন না। শনিবার সাতক্ষীরায় আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে একটা মিডিয়াতে। আমি ঢাকায় গিয়ে তাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসবো। আমরা কী অপরাধ করেছিলাম, তাদের কী ক্ষতি করেছিলাম? আমাদের নামে কেন তারা এই অপবাদ দিলো।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এ অঞ্চলের প্রধান দুটি সমস্যা হলো মিল ও বিল। আওয়ামী লীগ আমলে এ দুটিই ধ্বংস হয়েছে। একদিকে ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকার করা হয়েছে, অপরদিকে বিল ডাকাতিয়াসহ বিভিন্ন জলাশয় দখল ও স্লুইসগেট বন্ধ করে হাজার হাজার মানুষকে পানিবন্দি করে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে মিলগুলোতে লোকসান হলেও তার দায়ভার চাপানো হয়েছে শ্রমিকদের ওপর।
ডুমুরিয়া-ফুলতলা সন্ত্রাস কবলিত এলাকা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৫ বছরের জন্য তাকে এমপি নির্বাচিত করার পর সাধ্য অনুযায়ী সন্ত্রাসমুক্ত করা হয়েছে। আবার জনগণ তার ওপর দায়িত্ব দিলে প্রধান প্রধান সমস্যাগুলোর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো। পরিচালনা করেন থানা সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুন।