বগুড়ায় বিএনপিতে আসছে নতুন চমক

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ এএম

ছবি: সংগৃহীত
নতুন উদ্যমে কমিটি নিয়ে আসছে বগুড়ার বিএনপি। স্বৈরাচার, দুর্নীতি, লুটেরাবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে, তরুণ প্রজন্মকে দলে ভেড়ানো, উন্নয়ন, মানবসেবা, মেধাবী ও সাহসীদের নিয়ে গড়তে যাওয়া জেলা বিএনপি নতুন এ কমিটিতে থাকছে চমক।
জেলা বিএনপিকে আগের থেকে দিগুণ শক্তিনির্ভর করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনে বিগত দিনের ত্যাগী নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দলে রাখার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে হাইকমান্ড। যার সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বগুড়া জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপিতে এমনিতেই চাঙ্গাভাব দেখা যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রতিহিংসার শিকার হয়ে জেলা বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী ভাঙচুর, নাশকতাসহ নানা অভিযোগে মামলা হামলায় ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিতে এখন চাঙ্গাভাব লাগতে শুরু করেছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন মাঠে সরব । মিছিল মিটিং এবং দলীয় কর্মসূচিতে উত্তাল ঢেউ লেগেছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হিসেবে বগুড়া সবসময়ই বিএনপির দূর্গ হিসেবে ছিলো এবং এখনো রয়েছে। আর বিএনপির দূর্গ বলেই এ জেলায় বিএনপির ওপর সবচেয়ে বেশি আক্রমণ হয়।
স্বৈরাচার পতনের পর বিএনপিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিগত দিনের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরও শক্তিশালী করে বিএনপিকে মাঠে নামানো হবে। এ কমিটির মাধ্যমে স্বৈরাচার, দুর্নীতি, লুটেরাবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলবে। জেলা বিএনপির নতুন এ কমিটিতে থাকছে একের পর এক চমক। বলা হচ্ছে, প্রয়োজনে বিগত দিনে বহিষ্কৃত নেতাদের নেতৃত্ব বিবেচনা করে আবার দলে ফেরানো হবে। যেন নতুন পুরোনো মিলিয়ে বগুড়ায় বিএনপি হয়ে ওঠে পূর্ণাঙ্গ শক্তিশালী একটি দল। দলের হাইকমান্ড এমনই ভাবছেন।
বগুড়া জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ২০২০ সালের ১৬ মে বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং তিনজন পৌর কাউন্সিলরসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৭ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর একপর্যায়ে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাহ মেহেদী হাসান হিমুকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২৩ মে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ এনে বগুড়া জেলা যুবদলের কমিটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিলর সিপার আল বখতিয়ারকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায় থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিগত সময়ে পুলিশের অটো চয়েস মামলায় স্থান পেতো সিপার ও মাসুদ রানা ছাড়াও পৌর কাউন্সিলর পরিমল চন্দ্র দাস, মেহেদী হাসান হিমু, তৌহিদুর রহমান বিটু, দেলোয়ার পশারী হিরুসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। এ নেতাকর্মীদের বহিষ্কারাদেশ এবার প্রত্যাহার হতে পারে।
২০২২ সালের নভেম্বরে জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন রেজাউল করিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন আলী আজগর তালুকদার হেনা। বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন মোশারফ হোসেন।
জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সিপার আল বখতিয়ার জানান, দলের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এখনও করে যাচ্ছি। অসংখ্য মামলায় জেলহাজতে গিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেশির ভাগ নেতা-কর্মীরা বাসায় থাকতে পারতেন না বরং জেলেই বেশি থাকতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ নিয়েই বিএনপির জন্য আমাকে মাঠে নামতে হয়। আমি শ্রদ্ধেয় তারেক রহমানের সৈনিক। যতদিন বাঁচব তার দলই করব।
বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চাইলে বহিষ্কারাদেশ যে কোনো সময় প্রত্যাহার হতে পারে।
তিনি আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি গ্রাম থেকে জেলা পর্যন্ত শক্তিশালী করতে কর্মীসভা করা হচ্ছে।