×

রাজনীতি

শহীদ মিনারে ফারুকের ওপর হামলা হয়নি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১১ পিএম

শহীদ মিনারে ফারুকের ওপর হামলা হয়নি

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের দোতলায় রবিবার (৫ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে শনিবার (৪ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণ অধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসানের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত

   

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের একটি পক্ষ দাবি করে জানিয়েছেন,  শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণ অধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসানের ওপর কোনো হামলা হয়নি। তাদের দাবি, শহীদ মিনারে এক সমাবেশে ফারুক হাসান অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। ফারুক হাসানকে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত একজন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তবে গণ অধিকার পরিষদ ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত কয়েকজনকে রাজনৈতিক ‘ট্যাগ’ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত কয়েকজন রবিবার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের দোতলায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান। 

তারা বলেন, শনিবার (৪ জানুয়ারি) ‘জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ’ ব্যানারে আয়োজিত একটি সমাবেশে আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নেন। ওই অনুষ্ঠানে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসানও আমন্ত্রিত ছিলেন। সেখানে ফারুক হাসানের সঙ্গে তাদের একটি ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনা ঘটে। যদিও ফারুক হাসানের অভিযোগ, তার ওপর হামলা করেছে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে আহতদের পক্ষ থেকে কোরবান শেখ হিল্লোল নামের একজন বলেন, শহীদ মিনারের ওই অনুষ্ঠানে আহতদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের বলা হয়েছিল, ওই অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের নিয়ে কথা হবে। কিন্তু ফারুক হাসান সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। ফারুক হাসানকে রাজনৈতিক বক্তব্য না দেয়ার জন্য আন্দোলনে আহত সাইফুল ইসলাম অনুরোধ করেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য তাকে অনুরোধ করেন সাইফুল ইসলাম। এ সময় ফারুক হাসানসহ গণ অধিকার পরিষদের কয়েকজন সাইফুল ইসলামকে মঞ্চের পেছনে নিয়ে যান। তারপর আন্দোলনে আগত কয়েকজন এগিয়ে এলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এই ঘটনাকে গণ অধিকার পরিষদ রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে।

কোরবান আলী হিল্লোল বলেন, গণ অধিকার পরিষদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দিয়ে বলছে, এরা হামলাকারী। এরা দুষ্কৃতকারী, এদের ধরিয়ে দেন। তারা নানা ধরনের উদ্দেশ্যমূলক কথা বলছেন, রাজনৈতিক ‘ট্যাগ’ দিচ্ছেন। এখন সাধারণ মানুষ তো আমাদের চেনেন না। তারা যদি আমাদের ওপর হামলা করেন, এর দায়ভার কে নেবে? তিনি বলেন, আহতদের কোনো দল নেই। আহতদের নিয়ে বাণিজ্য করবেন না, ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করবেন না।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হককে উদ্দেশ করে কোরবান আলী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আন্দোলনে আহতদের পাশে থেকেছেন নুরুল হক। সহযোগিতাও করেছেন। গতকালের (৪ জানুয়ারি) ঘটনা সামান্য একটা ব্যাপার। চেয়ার- ছোড়াছুড়ির ব্যাপার। এটাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করবেন না। আর এ ঘটনার জন্য আহতদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়া হবে। কিন্তু সর্বপ্রথম আপনার (নুরুল হক) দলের কর্মীদের ঠান্ডা হতে বলেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত আবীর আহমেদ শরীফ। শনিবার (৪ জানুয়ারি) শহীদ মিনারের সমাবেশে তিনিও অংশ নেন। আবীর আহমেদ বলেন, শনিবার (৪ জানুয়ারি) শহীদ মিনারে ফারুক হাসানের ওপর কোনো হামলা হয়নি। তিনি পড়ে গিয়ে হয়তো আহত হয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদ প্রচার চালাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা নাকি অনুষ্ঠানে ছুরি নিয়ে গেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পেজ থেকে বলা হচ্ছে, আমরা নাকি সন্ত্রাসী। আমি বলতে চাই, ছাত্র-জনতা কোনো সন্ত্রাসী-গুণ্ডা নয়। ছাত্র-জনতা ২৪’–এর যোদ্ধা, ২৪’–এর বীর।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের একজন আব্দুর রহমান নিজেকে ছাত্র-অধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সহসভাপতি পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, শনিবাবের (৪ জানুয়ারি) ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে দেখছে গণ-অধিকার পরিষদ। এখানে আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা শুধুই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত। এ ঘটনাটিকে রাজনৈতিকভাবে বিশ্লেষণ না করতে গণ অধিকার পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফারুক হাসান ‘জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ’ নামের নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আয়োজনে শহীদ মিনারে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন। সেখানে দেয়া বক্তব্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ‘বিপ্লবী সরকার’ না হওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ফারুক হাসান বক্তব্যের পর মঞ্চ ছাড়লে কয়েকজন ব্যক্তি তার সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং একপর্যায়ে তার ওপর হামলা করা হয়। এ সময় সমাবেশস্থলের কয়েকটি চেয়ারও ভাঙচুর করেন ওই ব্যক্তিরা। এরপর ফারুককে ধাওয়া দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অভিমুখী সড়ক পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও তাকে মারধর করা হয়।

হামলার পর একটি ভিডিও বার্তায় ফারুক হাসান বলেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমাবেশে তিনি তার রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে ছাত্রদলের ‘সন্ত্রাসীরা’ উপস্থিত ছিল। সমাবেশে তার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তার ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেছে। তার মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। ভিডিও বার্তায় কারো নাম উল্লেখ করেননি ফারুক হাসান।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App