স্পিকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করেছিলেন শেখ হাসিনা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩০ এএম

শেখ হাসিনা ও শিরীন শারমিন চৌধুরী
গত বছরের আগস্টের শুরুতে ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তবে, ক্ষমতা হারানোর আগে তিনি সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
দ্য হিন্দু দাবি করেছে, শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করেছিলেন। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত করার জন্য, সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে এবং লকডাউন কার্যকর করার জন্য মাঠে ছিল, যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।
ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দুতে একান্ত সাক্ষাৎকারে হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দাবি করেছেন, আমরা তখন গণভবনে ছিলাম এবং পরিকল্পনা করছিলাম কীভাবে ছাত্র বিক্ষোভের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়। তবে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন, (সাবেক) প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক পদত্যাগে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সেই কারণে লকডাউনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দাবি করেছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনা চীন সফরে যাওয়ার পর ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন তীব্র গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। ছাত্ররা যখন “এক দফা দাবি— শেখ হাসিনার পদত্যাগ” দাবি করে, তখন হাসিনা মহিবুলকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন। তবে, ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করলে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান এবং আত্মগোপন করেন।
এছাড়া, হাসিনা সরকারের সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোভাবের ওপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান এবং বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এর পাশাপাশি, গুমকাণ্ড এবং জুলাই-আগস্টে গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সম্প্রতি ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও রয়েছে। এর আগে, গত বছরের আগস্টে হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার সকল মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের লাল পাসপোর্ট (কূটনৈতিক পাসপোর্ট) বাতিল করা হয়।