গডফাদার শামীম ওসমান আজ কোথায় জানতে চান ডা. শফিকুর রহমান

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ডিসি-এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, “আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রিম মামলা করে রাখেন, আমি গোলাম আযমকে হত্যা করব।” আজ সে কোথায়? এত অহংকার ভালো না। দাম্ভিকতা ভালো না। এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। সন্ত্রাসকে কখনো প্রশ্রয় দিতে নেই।’
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রায় দেড় দশক পর বিশাল জনসভার আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়াত।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েও উসকানি দিয়ে দেশে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান। মুক্তিপাগল মানুষ এসব সহ্য করবে না। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের যত টাকা চুরি-ডাকাতি-লুট করে বিদেশে পাচার করেছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে তা ফিরিয়ে আনতে হবে। গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশ থেকে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সেই টাকা ফিরিয়ে এনে জনগণের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত ৫৪ বছর এই জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছিল। সুকৌশলে এই বিভক্তি সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। তারা বিভক্তির শুরু করে পাহাড়িদের নিয়ে। তারা ঘোষণা দিয়ে বলে, “আমরা সবাই বাঙালি।” কিন্তু এটা নিয়ে পাহাড়িরা প্রতিবাদ করে। তখন থেকে এই যে বিভক্তি শুরু হয়েছে, তা এখনো চলমান। এখনো ওইখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি। এই বিভক্তি যত দিন থাকবে, তত দিন এই জাতির মধ্যে একতা সৃষ্টি হবে না। যা দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর প্রত্যক্ষ করেছে।’
জামায়াতর আমির আরো বলেন, ‘দেশের একজন নাগরিকের সব অধিকার পাওয়ার অধিকার আছে। এটাই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। আমাদের এই সমাজ হবে বৈষম্যহীন। আওয়ামী লীগ দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছে। প্রশাসনকে, বিচারব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ পুরোদমে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
ডা. শফিক বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানুষের সেবা করার সুযোগ পেলে সবার আগে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দেবে। এ দেশের ছাত্রসমাজের জন্য উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলবে। শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার পর কাউকে আর বেকার থাকতে হবে না। প্রত্যেকের জন্য যথোপযুক্ত কর্মের ব্যবস্থা করা হবে। নারীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। এ দেশের কৃষি, শিল্প, অ্যাগ্রো শিল্পগুলোকে আরও সমৃদ্ধিশালী করা হবে।’
সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতারা তাদের বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। সেই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে নিহত রিয়া গোপ, আলোচিত ত্বকী হত্যাসহ সাত খুনের সুষ্ঠু বিচার বাস্তবায়ন চান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ট্রাস্টের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী প্রমুখ।