যে কায়দায় বিতর্কিত সেই ক্যাচ ধরেন সূর্য, জানালেন কোচ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
৩৩ বছরের অপেক্ষা আর ৭ বার ফাইনালের মঞ্চে না খেলতে পারার আক্ষেপ ঘুচিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শিরোপা উল্লাসের একদম দ্বারপ্রান্তে গিয়ে হতাশাকে সঙ্গী করে প্রোটিয়ারা। ফাইনালে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৬ রানের সমীকরণ ছিল। শেষ পর্যন্ত সহজ সেই অঙ্ক মেলেনি প্রোটিয়াদের।
হার্দিক পান্ডিয়ার করা ইনিংসের ২০তম ওভারের প্রথম বলেই লং অফে উড়িয়ে মারেন ডেভিড মিলার। একেবারে সীমানা দড়ির কাছে সেটিকে তালুবন্দী করেন সূর্যকুমার যাদব। দুর্দান্ত এই ক্যাচ পুরো ম্যাচের চিত্রই বদলে দিয়েছে। ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম উপলক্ষও এই ক্যাচ। তবে কৌতূহলী ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন, শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে চাপ সামলে কীভাবে সূর্যকুমার এই ক্যাচ নিয়েছিলেন। এবার বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারতের ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ। দিলীপের দাবি, উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়েই ক্যাচ ধরেছিলেন সূর্যকুমার।
টি দিলীপের ভাষ্যমতে, ‘অনেকেই সূর্যকুমারের ক্যাচটা নিয়ে জানতে চাইছেন। অনুশীলনে এরকম ক্যাচ ও অন্তত ৫০টা ধরেছে। তবে ম্যাচের সময় সিদ্ধান্তটা ওরই ছিল। উপস্থিত বুদ্ধি এবং ক্রিকেট সচেতনতার উদাহরণ ওই ক্যাচ। বাউন্ডারির দড়ি কোথায় আছে, সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল সূর্যকুমারের। তাই ওকে ক্যাচটা ধরার সময় যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে। নিজে লাইনের বাইরে চলে যাওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে বল শূন্য ছুড়ে দিয়েছিল। আবার মাঠের মধ্যে পা দেওয়ার পর ক্যাচ সম্পূর্ণ করেছে। ওই মুহূর্তে এটা সম্পূর্ণ সূর্যকুমারের সিদ্ধান্ত।’
ওই ক্যাচের জন্য ফাইনালের মঞ্চে সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার পেয়েছেন সূর্যকুমার। ম্যাচ শেষে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ ড্রেসিংরুমে সূর্যকুমারের হাতে সেরা ফিল্ডারের পদক তুলে দেন ।
এ নিয়ে দিলীপের মন্তব্য, হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে এই ধরনের পারফরম্যান্সই পার্থক্য গড়ে দেয়। ফাইনালের রং বদলে দেওয়া ক্যাচের কৃতিত্ব সম্পূর্ণ সূর্যকুমারের।
এদিকে সূর্যকুমারের ওই ক্যাচটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোর বিতর্ক চলছে। অন্যান্য ম্যাচের মতো সেই আউট দেওয়ার আগে সীমানা দড়ির দিক থেকে ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল দেখানোসহ অন্য কোনো পরীক্ষা করা হয়নি।
রিপ্লে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ক্যাচের ভিডিও ক্লিপে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ক্যাচ নেওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সূর্যকুমারকে সীমানার বাইরে চলে যেতে, তবে তার আগেই বল শূন্যে তুলে দিয়ে মাঠে ঢুকে ফের ক্যাচটি লুফে নেন। পরে রিপ্লে পরীক্ষা করে সেটিকে আউট বলে সিদ্ধান্ত দেন টিভি আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো।
তাই ক্রিকেটবোদ্ধা-বিশ্লেষকসহ ভক্তদের অনেকেই মনে করছেন, সেটি দেখানো হলে আর কোনো সংশয় থাকত না। যদিও ভারতীয় ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা ওই ক্যাচকে আজীবন মনে রাখার মতো আখ্যা দিয়ে সূর্যকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন।
ফাইনালের ক্রুসিয়াল মোমেন্টে মিলারের উইকেটটি না পড়লে, সেটি ছক্কা বলে গণ্য হতো এবং ম্যাচের ফল ভিন্নও হতে পারত। তাই আম্পায়ার কেন বাড়তি সময় নেননি, তা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।