মেসির রেকর্ড ভাঙলেন রদ্রিগেজ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫২ পিএম

হামেস রদ্রিগেজ
২০১৪ বিশ্বকাপ! বড় কিছুর প্রত্যয়েই স্বপ্ন বুনেছিল কলম্বিয়ানরা। অলীক কল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন রাদামেল ফ্যালকাও। তবে কলম্বিয়ানদের স্বপ্নদর্শনে সবচেয়ে বড় তারকাকে এড়িয়ে গোটা আকর্ষণ নিজের দিকে কেড়ে নেন অন্য এক তরুণ। দেশের হয়ে ১০ নম্বর জার্সিতে ফোটালেন দুর্দান্ত ফুটবল শৈলী। সময়ের পরিক্রমায় বৈশ্বিক যেকোনো লড়াইয়ে কলম্বিয়ানদের বড় এক নাম এখন হামেস রদ্রিগেজ।
ততদিনে বড় কোনো ক্লাবের হয়ে মাঠ মাতানো হয়নি। তবে ব্রাজিল বিশ্বকাপের পরই রাতারাতি বড় তারকা বনে যান মোনাকোতে খেলা এই তরুণ। গ্রুপ পর্বে জাপানের বিপক্ষে তার করা গোল বিশ্বকাপের সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হয়। শেষ ষোলো থেকে সেবার বিদায় নিলেও ভক্ত-সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিলেন এই উইঙ্গার। এরপর বড় অঙ্কের ট্রান্সফার ফিতে বিশ্বকাপের ২০তম আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে দলে ভেড়ায় স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ।
লস ব্ল্যাঙ্কোস শিবিরে পাড়ি জমিয়ে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি রদ্রিগেজ। এরপর ধারে তাকে নিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। সেখানেও নিষ্প্রভ ছিলেন অ্যাটাকিং এই মিডফিল্ডার। তবে ১০ বছর পর ফের অগ্নিশিখা ছড়াচ্ছেন। কোপার আমেরিকার ৪৮তম আসরে আরও একবার রদ্রিগেজ চমকের দেখা মিলছে।
নেস্টর লরেঞ্জোর কলাকৌশলে ২৮ ম্যাচ ধরে অপরাজিত কলম্বিয়া। ভয়ডরহীন ফুটবল কৌশলে আসরের অন্যতম হট ফেবারিট ব্রাজিলকেও বিদায় করে দিয়েছে তারা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে উরুগুয়ের জয়রথ থামিয়ে ২০০১ সালের পর প্রথমবার কোপার ফাইনালে জায়গা করেছে কলম্বিয়ানরা।
দুর্ধর্ষ দলটির মধ্যমণি হয়ে শিরোপার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সেই রদ্রিগেজ। পাপেট মাস্টারের মতো সতীর্থদের খেলাচ্ছেন। ফাইনালে ওঠার পথে রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি'অরজয়ী লিওনেল মেসির রেকর্ডও ভেঙেছেন ছন্দের তুঙ্গে থাকা এই উইঙ্গার। কোপার এক আসরে সর্বোচ্চ ৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন আল-রাইয়ান এই তারকা। এর আগে, এক আসরে সর্বোচ্চ ৫ অ্যাসিস্ট করেছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জোড়া অ্যাসিস্ট করেছিলেন তিনি। পরের ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষেও এক অ্যাসিস্ট ছিল তার। পানামার বিপক্ষে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে জয়ের দিনেও জোড়া অ্যাসিস্ট করেন। নিজের পায়ের জাদুতে গোলও আদায় করে নেন। ফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষেও জড়িয়ে আছে তার নাম। জেফারসন লারমার মাথা ছুঁয়ানো বলে অ্যাসিস্ট করেন তিনি। সবমিলিয়ে ৭ গোলে সরাসরি অবদান রেখে তর্কাতীতভাবেই চলতি আসরের সেরা পারফর্মার ৩২ বছর বয়সী এই তারকা।
ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নিজের দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রাখতে পারলে জাতীয় দলের জার্সিতে নিজের প্রথম শিরোপাও এখন তার জন্য সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও তার হাতে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত। ২৩ বছর পর কোপার শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে বুড়ো হামেসই কলম্বিয়ার বাজির ঘোড়া।