০, ১, ২, ৩… এবং অবিশ্বাস্য মাহমুদউল্লাহ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
৬৩ বলে ফিফটির পর বেশ কৌতুহল-উদ্দীপক এক উদযাপনে মেতেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিষয়টি দেখে ভাবা যেতেই পারে, সমালোচনার জবাব দিচ্ছিলেন মিস্টার সাইলেন্টকিলার।
হাফ-সেঞ্চুরির পর শুরুতে ব্যাট উঁচিয়ে উদযাপন করেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর নিজের বুকে হাত দিয়ে এদিক-ওদিক নাড়িয়ে অনেকাংশেই বুঝাতে চেয়েছেন, অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে নিয়ে ‘হচ্ছে না, হচ্ছে না’ যে বর ওঠেছে, সেটারই জবাব তার ক্যারিয়ারের ২৯তম ফিফটি। পরে অবশ্য, খোলা আকাশের দিকে আঙুল উঁচিয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ঙ্কর বাজে ফর্মের মধ্য দিয়েই যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সর্বশেষ ৪ ওয়ানডে ইনিংসে মোটে ৬ রান করেছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অলিখিত ফাইনালে ব্যক্তিগত ৪ রানেই নুইয়ে পড়েছিলেন। সেই রিয়াদই খেললেন বীরোচিত এক ইনিংস। তার ৯৮ রানে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।
তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারলে প্রাপ্তিটা আরো বড় হতে পারতো অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের। যদিও কেবল তিন অঙ্ক দিয়ে এমন কিছুর পরিমাপ হয় না। নিজের ফর্মহীনতা, দলীয় পরিস্থিতি-সব মিলিয়ে নিজের সেরা সময়কেই প্রতিটি মুহূর্তে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মিস্টার সাইলেন্টকিলার।
দলীয় ৭২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ব্যাটিং বিপর্যয়ের শঙ্কা ছিল। এর মধ্যে ইনিংসের ২০তম ওভারে হঠাৎ মাঠে বসে পড়েন ৪ রানে ক্রিজে থাকা মাহমুদউল্লাহ। ফিজিও আসার পর শুয়েও পড়েছিলেন। সে সময়ে ধারণা করা হচ্ছিল, পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে তার। তবে দলের প্রয়োজনে সেদিকে নজর না দিয়ে, মুখ কুঁচকেই নতুন এক গল্প লেখায় মননিবেশ করলেন।
অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের সাবলীল ব্যাটিংয়ে মিরাজও সহজেই রিয়াদের ইশারা আঁচ করতে পেরেছিলেন। আগ্রাসী মনোভাব এড়িয়ে উইকেটে থিতু হওয়ায় মনোযোগ দেন টাইগার দলপতি। পঞ্চম উইকেটে রিয়াদের সঙ্গে গড়েন রেকর্ড জুটি।
ক্রিজে থিতু হয়ে ক্রমেই আগ্রাসী মনোভাবে হাজির হন মাহমুদউল্লাহ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কাও হাঁকান ময়মনসিংহের এই ক্রিকেটার। নিজের ইনিংসে মোট তিনটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। আর কোনো টাইগার ব্যাটারই ওভার বাউন্ডারির দেখা পাননি।
৭ ইনিংস পর হাফ-সেঞ্চুরি পেয়ে তার ব্যাটের ধার আরো বাড়ে। মিরাজের পর জাকের, নাসুমরা ফিরলেও স্কোরশিটে দ্রুত রান যোগ করতে থাকেন মাহমুদউল্লাহই। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার সুযোগও পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি।
তবে ফিফটি ছুঁয়েই গর্ব করার মতো রেকর্ডে নাম তুলেছেন তিনি। ৩৮ বছর ২৮১ দিন বয়সে বীরোচিত এই ইনিংস খেলেছেন রিয়াদ। লাল-সবুজের হয়ে আর কারোরই ৩৮ পেরিয়ে ওয়ানডেতে হাফ-সেঞ্চুরি স্পর্শ করার রেকর্ড নেই। সবশেষ গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৩৭ বছর ২৬৯ দিন বয়সে তিনিই এই রেকর্ড গড়েছিলেন।