জয় দিয়ে টেস্ট সিরিজ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম

বাংলাদেশ দল, ছবি: সংগৃহীত
জয় দিয়ে টেস্ট সিরিজ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ
ব্যাট-বল হাতে সেরা পারফরমেন্স দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে লড়াই করার লক্ষ্য নিয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
টানা ৪ টেস্ট হেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ভারতের মাটিতে দুটি ও ঘরের মাঠে অনভিজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দুটি টেস্ট হেরেছে টাইগাররা।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে টেস্ট ভিন্ন এক বাংলাদেশকে দেখা গিয়েছিল। পাকিস্তান সফরে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের অনন্য নজির গড়েছিল বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মূল লড়াইয়ে নামার আগে একটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। অ্যান্টিগার কুলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ড ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ড্র হওয়া দু’দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের ভালোভাবেই ঝালিয়ে নিয়েছে তারা। প্রথমে ব্যাট করে ২৫৩ রান করে বাংলাদেশ। এরপর বল হাতে ৮৭ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৯ উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা।
বাংলাদেশের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন বাঁ-হাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। এক দশমিক ৪ ওভার বল করে ১ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি।
মুরাদের সঙ্গে উইকেট শিকারের তালিকায় নাম তুলেন হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজও। হাসান-তাসকিন দুটি করে, শরিফুল-মিরাজ একটি করে উইকেট নেন। তবে উইকেটের দেখা পাননি নাহিদ রানা ও তাইজুল ইসলাম।
ব্যাটিংয়ে ছোট-ছোট ইনিংসে নিজেদের অনুশীলন সেরেছেন ব্যাটাররা। জাকের আলি ৪৮, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৪১, মুমিনুল হক ও উইকেটরক্ষক লিটন দাস করেন ৩১ রান।
সিরিজের প্রথম টেস্টের ভেন্যু অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে লজ্জার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। ২০১৮ সালের সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা। যা এখনও বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় রান। ম্যাচটি ইনিংস ও ২১৯ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
২০২২ সালের সফরেও এই ভেন্যুতে একটি টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ৭ উইকেটে হার বরণ করেছিল টাইগাররা।
এখন পর্যন্ত ২০ বার টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে চারবার জয় ও ১৪টিতে হেরেছে টাইগাররা। দুটি ম্যাচ ড্র হয়।
এই সিরিজে অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ দল নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিমকে পাবে না টাইগাররা।
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে জড়িয়ে থাকায় জনগণের ক্ষোভের কারণে খেলার ইচ্ছা পূরণ হয়নি সাকিবের। তার টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে, এমনটা ধরেই নেয়া যায়।
অন্যদিকে ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশের নিয়মিত অধিনায়ক শান্ত ও মুশফিক।
এদিকে প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ পারফরমেন্সের কারণে টেস্ট অভিষেক হতে পারে হাসান মুরাদের। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩১ ম্যাচে ১৩৯ উইকেট আছে তার। ইনিংসে ১২ বার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করেছেন মুরাদ। গত বছর এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের হয়ে দুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললেও কোন উইকেট পাননি মুরাদ।
শান্তর জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে শাহাদাত হোসেন দিপুকে। গেল বছরের নভেম্বরে সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকের পর ৪ টেস্টের ৮ ইনিংসে ১১৮ রান করেছেন তিনি। এ বছরের এপ্রিলে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন এই ডান-হাতি ব্যাটার। শান্তর অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেবেন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ।
অন্যদিকে দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ও সাবেক অধিনায়ক জেসন হোল্ডারকে ছাড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাঁধের ইনজুরির পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার জন্য এই সিরিজে খেলবেন না হোল্ডার। ক্রেইগ ব্রার্থওয়েটের নেতৃত্বাধীন দলটি তারুণ্য ও অভিজ্ঞদের সংমিশ্রণে গড়া।
জ্যামাইকায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি শুরু হবে ৩০ নভেম্বর। টেস্টের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দল দুটি।