মধ্যনগরে ৪০টি ভারতীয় গরুসহ আটক ৪

মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে ভারত থেকে চোরাই পথে আনা ৪০টি গরুসহ চোরাকারবারে সম্পৃক্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। আটক করা ৪০টি গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের কায়েতকান্দা সোমেশ্বরী নদীর ঘাটে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল রায়।
এসময় সেখান থেকে ৪০টি ভারতীয় গরুসহ চারজনকে আটক করেন তিনি। আটকরা হলেন- উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের আমানীপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাসেমের ছেলে মহর আলী (৪৮), তেলীগাঁও গ্রামের আসান্তর আলীর ছেলে আয়নাল হক (৪০), একই গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে দুধ মিয়া (৩৪), জগন্নাথপুর গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম (৫৮)।
পরে গরুসহ আটকদের থানায় হস্তান্তর করে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে আটক করা ভারতীয় গরু চোরাকারবারের সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে ও ৬/৭ অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সজীব রহমান বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। চোরাচালানের বিরুদ্ধে নিয়মিত আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল রায় ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাত ১১টা ৩০ হতে দেড়টা পর্যন্ত কায়েতকান্দা গ্রামের নিকটস্থ নৌকা ঘাটে অবৈধ গরু পাচারের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই সময় ৪০টি গরুসহ চারজনকে আটক করা হয়। তারা গরুর মালিকানার স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দাখিল করতে পারেননি। পরবর্তীতে গরুসহ আটকদের থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয় ও নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য অফিসার ইন চার্জ, মধ্যনগর থানাকে নির্দেশ দেয়া হয়। এই অভিযানে মধ্যনগর থানা পুলিশসহ আনসার সদস্যরা সহায়তা করেন।'
উল্লেখ্য গত ৭-৮ বছর ধরে মধ্যনগর সীমান্ত দিয়ে প্রতি রাতেই কোটি কোটি টাকার গরু ও মহিষ চোরাই পথে ভারত থেকে আসছে। এসব গরু ও মহিষ রাতে এমনকি দিনের বেলায় প্রকাশ্যে পাচার করা হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে উপজেলার মহিষখলা হতে নৌকা যুগে চোরাচালানের শত শত গরু, মহিষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে সীমান্তের ওপার থেকে আসা গরু-মহিষ এপারে এনে মহিষখলা বাজারের ইজারাদারের কাছ থেকে গরুপ্রতি এক হাজার এবং মহিষের জন্য দুই হাজার টাকা দিয়ে গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়ের হাসিল রসিদ সংগ্রহ করলেই এসবের বৈধতা পাওয়া যায়। আর এই কাগজের বলেই ভারতীয় গরু-মহিষ বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমের পাঠিয়ে দেয়া হয় পাশের বংশীকুত্তা দক্ষিণ ইউনিয়নে অনুমোদনবিহীন গবাদিপশুর হাট দাতিয়াপাড়া নতুন বাজার ও বারহাট্টা উপজেলার নৈহাটী বাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে এই প্রথম প্রশাসনের জালে আটকা পড়েছে অবৈধভাবে আনা ভারতীয় গরুর চালান।