জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল, যা বললেন তিনি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম

বাংলাদেশের নির্বাসিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের নির্বাসিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি সম্প্রতি তার ফেসবুক ওয়ালে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি চাঞ্চল্যকর পোস্ট দিয়েছেন। আল জাজিরার এই সাংবাদিক পোস্টে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সিস্টেমে বিরাজমান মন্দ অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসে রিসেট বাটন থাকে, যা চাপলে সেই ডিভাইস নতুনভাবে কাজ শুরু করে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যখন ম্যালফাংশন দেখা দেয়, তখন সেটা শুধরানোর জন্যও রিসেট প্রয়োজন হয়।
জুলকারনাইন তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যে পচন ধরেছে এবং নানা প্রশাসনিক স্তরে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি যে ছড়িয়ে পড়েছে, তা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য বড় ধরনের হুমকি। তার ভাষায়, সিটি কর্পোরেশনের টয়লেট থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত নেপোটিজম ছেয়ে গেছে। সামি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর চেপে বসা একটি চৌর্য্যরাজত্ব জনগণের অধিকারের টুঁটি চেপে ধরেছে, যেখানে প্রতিবাদকারীদের হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে।
পোস্টে তিনি ২০০৮ থেকে বর্তমান সময়ের মধ্যকার বিভিন্ন ঘটনাবলীর উল্লেখ করেন, যেখানে রাষ্ট্রের নানা অপশক্তি জনগণের সম্পদ লুট করেছে এবং ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এই কর্মকাণ্ডকে তিনি ‘ক্লেপটোক্রেসি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, যে অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দেশের মুক্তির জন্য ১ হাজার ৬০০ এর বেশি প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
জুলকারনাইন আরো প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এত রক্তপাতের পরেও রাষ্ট্রকে ‘রিসেট’ করার প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করা হচ্ছে। তার মতে, ‘রিসেট মানে শেষ নয়, রিসেট মানে নতুন যাত্রা, দেশের নতুন সূর্যোদয় দেখার অপেক্ষা।’ তিনি বলেন, দেশটা সকলের, ‘কারো বাপের না।’
জুলকারনাইনের পোস্টে কমেন্ট করেছেন অনেকেই। অনিক খান নামের একজন লিখেছেন, এদের এগুলো বুঝিয়ে লাভ নেই। এতো পাপ, এতো অন্যায়ের পরেও যাদের কোনো ভাবোদয় নেই, তাদের দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কোনো চিন্তাও নেই। তাদের সব চেতনা, গলাবাজি শুধুই তাদের নিজেদের জন্য, নিজেদের লুটপাট চালিয়ে যাওয়ার জানা জন্য।
সাহাদাত হোসেন তালুকদার নামের একজন লেখেন, সে নাকি আবার আসবেন উচিত শিক্ষা দিবেন বাংলাদেশের মানুষ যদি মানুষ হয় আওয়ামী লীগকে জিবনেও রাজনীতি করতে দিবে না। আর ফখরুল সাহেব ভুলে গেছেন আওয়ামী লিগের ইতিহাস দরকার হলে বিএনপি কেও বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে চিরবিদায় দিতে হবে। আপনি আপনার দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন আবার সেই দেশে রাজনীতি করবেন তা হবে না।
আলি জাওয়াদ চৌধুরী নামের একজন লিখেছেন, অমানুষটা জুলাইয়ের গণহত্যা মানতে নারাজ তদন্ত হওয়ার আগে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা নিয়ে আপোষহীন যেটা তার বাপ ও হয়তো দেখে নাই! আবু সাঈদকেও সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেছে একটা পোস্টে। নিজেই একটা হিপোক্রেট হয়ে উল্টো হিপোক্রেসির জ্ঞান দিচ্ছিল। ওর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা উচিত কিভাবে এই পদে আসলো। বদলি করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাঠানো কোনো শাস্তির পর্যায়ে পড়েনা।
আরো পড়ুন: ফেসবুকে তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস ভাইরাল, যা লিখলেন তিনি
পোস্টটিতে কমেন্ট করেছেন ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। শেয়ার করেছেন অন্তত এক হাজার মানুষ। জুলকারনাইন সায়েরের এই পোস্টে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে একটি গভীর বার্তা রয়েছে, যেখানে তিনি রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের জোর আহ্বান জানিয়েছেন।