এলাকার জনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কার?

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১৫ পিএম

এলাকার জনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের। বিধায় নিম্ন আদালতে এ সংক্রান্ত অপরাধের বিচার বেআইনি ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
‘জনশৃঙ্খলা’ বলতে কি বুঝায়, জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হোক বা না হোক পায়ের চলার এমন পথ, মাঠ, চলাচলের রাস্তা, সরকারি রাস্তা, নর্দমা, পরিবেশ, জলবায়ু, জলাভূমি, তথা সমুদ্র, সমুদ্র সৈকত, নদ-নদী, নদ-নদীর পাড়, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, নালা, ঝিল, ঝিরি ও সকল উন্মুক্ত জলাভূমি, পাহাড়-পর্বত, বন, বন্যপ্রাণী এবং বাতাস এই সব কিছুর অবৈধ দখল, দূষণ এবং বিনষ্ট ‘জনশৃঙ্খলা’ এর অন্তর্ভুক্ত।
মো. মফিজুল হক ও অন্যান্য বনাম রাষ্ট্র মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ গত বছরের ২৩ নভেম্বর এ রায় ঘোষণা করেন। সম্প্রতি উক্ত ফৌজদারি রিভিশন মামলায় প্রদত্ত রায়ের ১৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
ফৌজদারি রিভিশন ও হাইকোর্টের রায় অধস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করেন। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। পরবর্তীতে রুলটি চূড়ান্ত করে রায় ঘোষণা করেন।রায়ে হাইকোর্ট বলেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এলাকার জনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের।
ফৌজদারি রিভিশন ও হাইকোর্টের রায় অধস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করেন। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। পরবর্তীতে রুলটি চূড়ান্ত করে রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এলাকার জনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের।উক্ত জনশৃঙ্খলা সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনের ধারা ৯৩(১) মোতাবেক এসবের অবৈধ দখল, দূষণ ও ক্ষতিসাধন বেআইনি। একই আইনের ধারা ৯৩(২) অনুযায়ী এসবের অবৈধ দখল, দূষণ ও বিনষ্টকারীদের পরিষদ নোটিশ প্রদান করে অপসারণ ও দূষণ প্রতিকারের ব্যবস্থা করবে।রায়ে আদালত আরো বলেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন দ্বারা দণ্ডবিধির ধারা ৪৩১ কার্যত (de facto) বাতিল হয়ে গেছে, তথা এটি কার্যকারিতা হারিয়েছে। সুতরাং থানায় এ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের এখতিয়ারবিহীন ও বেআইনি। আলোচ্য অভিযোগটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করা উচিত ছিল।
সুতরাং, এখন থেকে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হোক বা না হোক পায়ের চলার এমন পথ, মাঠ, চলাচলের রাস্তা, সরকারী রাস্তা নর্দমা, পরিবেশ, জলবায়ু, জলাভূমি, তথা সমুদ্র, সমুদ্র সৈকত, নদ-নদী, নদ-নদীর পাড়, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, নালা, ঝিল, ঝিরি ও সকল উন্মুক্ত জলাভূমি, পাহাড়-পর্বত, বন, বন্যপ্রাণী এবং বাতাস এই সব কিছুর অবৈধ দখল, দূষণ এবং বিনষ্ট হলে যে কেউ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
লেখক: মো. হায়দার তানভীরুজ্জামান, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ফাইন্ড মাই অ্যাডভোকেট,
[email protected]