‘নিজে থেকে কাজ চাইতে পারতাম না’

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

মনামী ঘোষ
সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত ‘পদাতিক’ ছবিতে মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনামী ঘোষ। সমাজমাধ্যম বনাম অভিনয়, শখ-শৌখিনতা থেকে সংসার। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে সব বিষয়েই কথা বলেছেন এ অভিনেত্রী। তারই চুম্বকাংশ মেলার পাঠকদের জন্য-
অনেক দিন পর আপনি আবার কোনো ছবির প্রচারে...
শুধু ছবি নয়, অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও প্রচার করতে খুব ভালো লাগে। মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমি অনেক কিছু করতেই পছন্দ করি।
এই ছবিতে আপনি গীতা সেনের চরিত্রে। ফার্স্ট লুক প্রকাশের পর থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
দু’রকমের প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। লুক দেখে একদল প্রশংসা করেছেন। আর যারা ছবি দেখেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই আবার ফোন করে প্রশংসা করেছেন।
প্রস্তাব পাওয়ার পর মনের অবস্থা কী রকম ছিল?
সৃজিত দা-ই আমাকে ফোন করে অফিসে আসতে বলেছিলেন। তারপর শুনলাম, মৃণাল সেনের স্ত্রীর চরিত্রে তিনি আমাকে ভেবেছেন! খুব অবাক হই। আমি কেন? সম্ভবত, ছবির বাকি অভিনেতারা চূড়ান্ত হয়ে যান, শুধু গীতা সেনের চরিত্রাভিনেত্রীর নির্বাচন বাকি ছিল। শুনেছিলাম, সৃজিত দার এক সহকারীই নাকি আমার নাম প্রস্তাব করেন।
চরিত্রের জন্য আপনি নিজেকে কীভাবে তৈরি করেছিলেন?
সৃজিত দা কিছু তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। যেমন- মৃণাল সেনের যে ছবিগুলোতে তিনি অভিনয় করেছিলেন। মৃণাল সেনের সঙ্গে তার একটা সাক্ষাৎকার ছিল। সেটা দেখেও কিছুটা সুবিধা হয়। বাকিটা অন্যদের থেকে শুনে, বুঝে তারপর অভিনয় করেছি।
শুটিং ফ্লোরে চঞ্চল চৌধুরীকে কেমন লাগল?
খুবই ভালো মানুষ। সব সময় তিনি চরিত্রের মধ্যে থাকতেন। ফ্লোরে শটের ফাঁকে আমরা একসঙ্গে চিত্রনাট্য পড়তাম। তবে ফ্লোরে টুকটাক আড্ডাও হতো। মনে আছে, সকালে ফ্লোরে এসেই আমার দিকে তাকিয়ে বলতেন, ‘গুড মর্নিং, গিন্নি। কেমন আছ?’
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হয়েছিল?
সৃজিত দা খুব কড়া। তিনি যেটা চাইবেন, সেটাই ফ্লোরে হবে। আমি তো বলেছিলাম, ফ্লোরে ওর বকাবকি করার গল্প আমি জানি। তখন সৃজিত দা বলেন, ‘তুই ল²ীমেয়ে হয়ে ফ্লোরে এলেই আর বকাবকি করব না।’ অর্থাৎ প্রস্তুতি নিয়ে ফ্লোরে আসতে হবে। আমি কিন্তু ল²ী হয়েই শুটিং করেছি। তাই এতটুকুও বকুনি খেতে হয়নি। প্রথম দিন হাসপাতালের একটা দৃশ্যের শুটিং ছিল। কয়েকটা শটের পর সৃজিত দা নিজেই বলেছিলেন যে, সব যদি ঠিকঠাক করে দিই, তা হলে তিনি আর কী করবেন। আমার কাছে এটা খুব বড় প্রাপ্তি।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রশংসা, সেই সঙ্গে নিজেই বলছেন, আপনি পরিশ্রমী অভিনেত্রী। তার পরও আপনাকে এত কম ছবিতে দেখা যায় কেন?
সেটা পরিচালকরাই বলতে পারবেন। আমি মনে করি, আমি খুব ভালো অভিনেত্রী। ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকরাও সেটাই মনে করেন। আমি ভালো নাচ করতে পারি। লোকে বলে আমি নাকি সুন্দরী। তা হলে নায়িকা হওয়ার জন্য আর কী চাই! তার পরও কেন প্রস্তাব আসে না, আমিও জানতে চাই।
আপনি কি নিজে থেকে কাজ চেয়েছেন?
আমার পিআর খারাপ। দীর্ঘদিন নিজে থেকে কাজ চাইতে পারতাম না। কিন্তু পরে বুঝলাম, আমি যে কাজ করতে চাই, সেটা জানানো জরুরি। মাঝে ধারাবাহিকের জন্য একটা সময় অনেক কাজের প্রস্তাব ফিরিয়েছিলাম। একবার ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির এক পরিচালক বললেন, তিনি জানেন আমি ভালো অভিনেত্রী, কিন্তু কাজের অনুরোধ যেন না করি। বলেছিলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, তোকে সুযোগ দিতে পারছি না।’
‘ইরাবতীর চুপকথা’র পর বেশ কয়েক বছর কেটে গেল। ধারাবাহিকে ফেরার ইচ্ছে নেই?
এই মুহূর্তে আমি নিজেকে বিভিন্নভাবে এক্সপ্লোর করতে চাইছি। ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্র ছাড়া করব না। তাই রাজি হওয়ার অর্থ মাসে ২৬ দিন সময় দিতে হবে। ধারাবাহিক থেকে বিরতি না নিলে আজকে মিউজিক ভিডিও, ছবি, নিজের প্রযোজনা সংস্থার মতো অন্য কাজগুলো তো করতে পারতাম না! তাই আপাতত ধারাবাহিক নিয়ে কিছু ভাবছি না।
বিয়ে কবে করছেন?
এই মুহূর্তে কোনো পরিকল্পনা নেই। আমার আরও বড় বড় কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
শোনা যায়, সৈকত বারুরির সঙ্গে আপনি নাকি বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন...
আজকে যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি, তার জন্য কিন্তু আমার পরিবার এবং কাছের মানুষরা অনেক সাপোর্ট করেছেন। বিয়ে তো একটা প্রতিষ্ঠান। আমি কাজের ক্ষেত্রে নিজের ২০০ শতাংশ দেয়ার চেষ্টা করি। তেমনই বিয়ে করলেও কাজের মতোই আমি নিজের ২০০ শতাংশ দিতে চাই। একটু সংসার করলাম, একটু শুটিং করলাম, সেটা পারব না।
বাড়ি থেকে চাপ আসে না?
না। দূরসম্পর্কের আত্মীয়রা দেখা হলে একটু-আধটু জানতে চান। কিন্তু আমার বাড়ি থেকে মা বা নিকট আত্মীয়দের পক্ষ থেকে কোনো চাপ আসে না।