×

প্রথম পাতা

পরীক্ষায় ফিরল গ্রেডিং পদ্ধতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পরীক্ষায় ফিরল গ্রেডিং পদ্ধতি
   

চলতি বছর থেকেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বসতে হবে তিন ঘণ্টার বার্ষিক পরীক্ষায়। নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবই অনুসারে এই পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের। একই সঙ্গে থাকছে শিখনকালীন/ধারাবাহিক মূল্যায়নও। লিখিত মূল্যায়ন থেকে ৭০ শতাংশ নম্বর, আর শিখনকালীন মূল্যায়ন থেকে ৩০ শতাংশ নম্বর নিয়ে বার্ষিক মূল্যায়ন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এই ফল আগের মতো গ্রেডিং পদ্ধতিতেই প্রকাশ করা হবে। তিন বা ততোধিক বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী ডি গ্রেড পেলে সে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

গতকাল বুধবার ২০২৪ সালের শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশিকা জারি করেছে এনসিটিবি। একই সঙ্গে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস ও প্রশ্নকাঠামো বা নমুনা প্রশ্ন প্রকাশ করা হয়েছে।

এনসিটিবি জানিয়েছে, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কার্যক্রমে শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব তত্ত্বাবধানে শিক্ষকদের দ্বারা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং প্রদত্ত প্রশ্নপত্রের নমুনা অনুসরণ করে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন। তবে কোনোক্রমেই নমুনা প্রশ্নপত্র হুবহু ব্যবহার করা যাবে না। প্রণীত প্রশ্নের সাহায্যে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন।

বার্ষিক ও শিখনকালীন মূল্যায়ন : প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রমের মোট নম্বর হবে ১০০। এর মধ্যে শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব হবে ৩০ শতাংশ এবং পরীক্ষার গুরুত্ব হবে ৭০ শতাংশ। বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক জিপি বা গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকে নির্দেশিত একক কাজ, জোড়ায় কাজ, পোস্টার প্রেজেন্টেশনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শিখনকালীন মূল্যায়নের ‘মূল্যায়ন আইটেম’ হিসেবে বিবেচিত হবে। শিখনকালীন মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির আওতাধীন শিখনকালীন মূল্যায়নের যেসব কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং যেগুলো সামনে সম্পন্ন হবে সেগুলোর রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। শিখনকালীন মূল্যায়নের যাবতীয় কার্যক্রম বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর আগেই সম্পন্ন করতে হবে।

বার্ষিক পরীক্ষা যেভাবে হবে : বার্ষিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষার মোট সময় হবে ৩ ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের নির্দেশিকা, প্রশ্নের কাঠামো, মানবণ্টন ‘বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনায়’ বিস্তারিত দেয়া আছে। বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনায় নমুনা প্রশ্নপত্র দেয়া আছে। লিখিত পরীক্ষার উত্তর লেখার জন্য আগের মতো বিদ্যালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় খাতা সরবরাহ করতে হবে।

ফলাফলে ফিরছে গ্রেডিং প্রদ্ধতি : শ্রেণি উত্তরণের জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ের মোট নম্বর হবে ১০০। এই ১০০ নম্বরের মধ্যে ধারাবাহিক বা শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব হবে ৩০ শতাংশ এবং লিখিত বার্ষিক পরীক্ষার গুরুত্ব হবে ৭০ শতাংশ। যেহেতু প্রত্যেক বিষয়ে ধারাবাহিক বা শিখনকালীন মূল্যায়নের জন্য বরাদ্দকৃত মোট নম্বর ৩০ এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত মোট নম্বর ১০০, সেহেতু একজন শিক্ষার্থীর একটি বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ওই বিষয়ের ধারাবাহিক বা শিখনকালীন মূল্যায়নে তার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে লিখিত বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ৭০ শতাংশ যোগ করে ওই বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল বা গ্রেড নির্ণয় করতে হবে।

এছাড়া মূল্যায়নে আগের মতো ৮০ থেকে ১০০ নম্বর পেলে এ প্লাস বা ৫ পয়েন্ট, ৭০ থেকে ৭৯ নম্বর পেলে এ গ্রেড বা ৪ পয়েন্ট, ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর পেলে এ মাইনাস বা ৩ দশমিক ৫ পয়েন্ট, ৫০ থেকে ৫৯ পেলে বি গ্রেড বা ৩ পয়েন্ট, ৪০ থেকে ৪৯ পেলে সি গ্রেড বা ২ পয়েন্ট, ৩৩ থেকে ৩৯ পেলে ডি গ্রেড বা ১ পয়েন্ট ও ০০ থেকে ৩২ পেলে এফ গ্রেড বা ০ পয়েন্ট পাবেন শিক্ষার্থীরা। একটি বিষয়ে সর্বনিম্ন ডি গ্রেড পেলে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ বলে বিবেচনা করা হবে। ৩ বা ততোধিক বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী ডি গ্রেড পেলে সে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না। তবে বিষয় শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধান বিশেষ বিবেচনায় তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তরণের সুযোগ দিতে পারেন। বিশেষ বিবেচনার বিষয়টি শুধু ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ষষ্ঠ এবং সপ্তম এবং চলতি বছর অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামের আলোকে পাঠদান শুরু হয়। এই কারিকুলামের ছিল না কোনো লিখিত পরীক্ষা। তুলে দেয়া হয় গ্রেডিং পদ্ধতিও। শিখনকালীন ও ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ হতো। কারিকুলামে পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকায় শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ করেন অভিভাবকরা। আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগের পর দায়িত্ব নেয়া অর্ন্তবর্তী সকার এই কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য নয় উল্লেখ করে নতুন কারিকুলাম বাতিল করে পুরাতন কারিকুলামে (সৃজনশীল) ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানায়, আগামী শিক্ষাবর্ষে সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে আনা হবে পরিমার্জন ও সংশোধন।আগামী বছর থেকে সব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে বিভাগ নির্বাচনের সুযোগ পাবে। তবে নতুন কারিকুলামের কারণে এই বছর নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিভাগ নির্বাচনের সুযোগ পায়নি। তারা আগামী বছর দশম শ্রেণিতে বিভাগ নির্বাচনের সুযোগ পাবে। দুই বছরের জায়গায় এক বছরে তাদের সিলেবাস শেষ করার জন্য সিলেবাসও সংক্ষিপ্ত করা হবে। দশম শ্রেণিতে তাদের পাঠদান করা হবে পুরাতন কারিকুলামের আলোকে। এছাড়া আগামী বছর পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করে পরের বছর অর্থাৎ ২০২৬ সাল থেকে তা পুরোপুরিভাবে কার্যকর করা হবে বলেও জানিয়েছে সরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App