শান্তর ফেরার দিনে শীর্ষে মেট্রো

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-675e5377a94e6.png)
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আগে জাতীয় ক্রিকেট লিগের টি-টোয়েন্টি সংস্করণ প্রথমবারের মতো মাঠে গড়িয়েছে। বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গতকাল মাঠে নেমেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দীর্ঘ এক মাস পর মাঠে নেমে খেলেছেন ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। এদিকে খুলনাকে হারিয়ে টানা তিন ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা মেট্রো। মেট্রো জিতলেও চট্টগ্রামের বিপক্ষে পরাজিত হয়েছে ঢাকা বিভাগ।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে চলছে এনসিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। যেখানে রাজশাহীর হয়ে নাম লেখালেও আগের ম্যাচগুলোয় তিনি একাদশে ছিলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ইনজুরিতে পড়েছিলেন তিনি। এরপর ওই সিরিজের শেষ ওয়ানডের পর পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই তিনি ছিটকে যান। এরই মাঝে শান্ত মাঠে ফিরেছেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগে। এর আগে প্রথম দুই ম্যাচে রাজশাহীর ডাগআউটে দেখা যায় শান্তকে। মাঠে কখনো পানি নিয়ে গিয়েছেন, আবার ফিল্ডিং করেছেন বদলি ক্রিকেটার হিসেবে। অবশেষে দলের তৃতীয় ম্যাচে গতকাল একাদশে ফেরেন এই ওপেনিং ব্যাটার। বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে রাজশাহীর হয়ে ওপেনিংয়ে নেমে করেছেন ৮০ রান। ৫৪ বলের ইনিংসে টাইগার অধিনায়ক ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। এক মাসেরও বেশি সময় পর শান্তর মাঠে ফেরাটা হলো তৃপ্তির। যদিও সেঞ্চুরি না পাওয়ায় প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে তাকে হতাশই দেখা গেছে। শান্ত ছাড়াও হাবিবুর রহমান সোহানের ৪৭ ও সাব্বির হোসেনের ২৩ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে রাজশাহী ৫ উইকেটে ১৮৪ রান সংগ্রহ করেছে। তবে বিশাল রান করেও হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে শান্তর দল। বরিশালের ওপেনার আবদুল মজিদ ও তিনে নামা ফজলে মাহমুদের জোড়া ফিফটিতে ৩ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গিয়েছে বরিশাল।
এর আগে আফগান সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে খেলার সময় চোটে পড়েছিলেন শান্ত। শট কাভারে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কুঁচকিতে ব্যথা পেয়ে তিনি মাঠ ছেড়েছিলেন। পরে ম্যাচের বাকিটা সময় অধিনায়কত্ব করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের সিরিজেও পুরোপুরি চোটমুক্ত না হওয়ায় বিসিবি শান্তকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি। যে কারণে গত মাস থেকেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন তিনি। মিরপুর শেরেবাংলার মাঠে প্রতিদিন ফিটনেস কিংবা রানিংয়ের মাধ্যমে আসন্ন বিপিএলের আগেই মাঠে ফিরতে মরিয়া তিনি।
এদিকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাঁহাতি পেসার ফাহাদের তোপে পড়ে মাত্র ৬৪ রানে গুটিয়ে গেছে ঢাকা। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৪ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নিয়েছে চট্টগ্রাম। নতুন বলে টানা ৪ ওভারের স্পেলে একটি মেইডেনসহ মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট নেন ফাহাদ। প্রথম ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে আশিকুর রহমানকে এলবিডব্লিউ করেন ফাহাদ। পরের ওভারে তার শিকার আরিফুল ইসলাম ও মাহিদুল ইসলাম। নিজের তৃতীয় ওভারে ঢাকা অধিনায়ক সাইফ হাসানকেও ফেরান ফাহাদ। ফাহাদের ৪ উইকেট ছাড়াও ২টি করে উইকেট নেন ইফরান হোসেন, আহমেদ শরিফ ও মাহমুদুল হাসান জয়। পরে রান তাড়ায় ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ বলে ৪৪ রান করেন জয়। অন্যপ্রান্তে অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল ৪টি চারে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। তিন ম্যাচে চট্টগ্রামের এটি দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে তিন ম্যাচে একটি জয় ঢাকার। দাপুটে বোলিং করে ম্যাচসেরা হয়েছেন ফাহাদই।
অন্যদিকে সিলেটেই আরেক মাঠে খুলনাকে ৬ রানে হারিয়েছে ঢাকা মেট্রো। তিন ম্যাচের সবকটি জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে মেট্রো। সমান ম্যাচে খুলনার জয় একটি। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মেট্রোর জয়ের কারিগর আলিস। তার হাতেই ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কার। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মেট্রোকে ঝোড়ো শুরু এনে দেন ইমরানউজ্জামান ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। দুজন মিলে ৪৪ বলে গড়েন ৬৭ রানের জুটি। ৭ চার ও ২ ছক্কায় ২৮ বলে ৪৬ রান করে ফেরেন ইমরান।
নাঈমের ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ২৫ রান। এরপর শামসুর রহমান ১৮ বলে ২৬ রান করলে দলীয় সংগ্রহ ১৪৭ রান হয়। খুলনার হয়ে বাঁহাতি পেসার মেহেদি ২৫ রানে নেন ৩ উইকেট। রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা। হতাশ করেন এনামুল হক, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, নুরুল হাসান সোহানরা। সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জেতা আজিজুল হাকিম তামিম ১ চার ও ২ ছক্কায় ১৭ বলে ২৯ রান করে কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন।