মুসলিম আমেরিকানরা এবারের নির্বাচনে কোন পক্ষে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
মার্কিন নির্বাচনে সংবাদমাধ্যমে একটি প্রশ্ন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে, মুসলিম আমেরিকানরা এবারের নির্বাচনে কোন পক্ষ নেবেন? মুসলমানরা মার্কিন জনসংখ্যার এক শতাংশ। সংখ্যার বিচারে খুব বেশি নয়। কিন্তু মিশিগান ও পেনসিলভেনিয়ার মতো তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যগুলোর জন্য মুসলিম ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। আর এই বছরের মুসলিম ভোটের ক্ষেত্রে একটাই ইস্যু—গাজা। গাজার নির্মম ভয়ংকর যুদ্ধে বাইডেন-কমলা প্রশাসনের ভূমিকায় আমেরিকান মুসলমানরা হতাশ।
মুসলমানরা ভোলেননি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা। ভোলার কথা নয় যে কীভাবে ৯/১১ পরবর্তী সময়ে রিপাবলিকানরা ইসলামফোবিয়া অব্যাহত রেখেছেন। আমেরিকান মুসলিমরা এবার তাহলে কী করবেন? তাঁরা কি দুই শয়তানের মধ্যে কম খারাপটাকেই বেছে নেবেন? নাকি এই ভোট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন? নির্বাচনী জরিপ বলছে যে প্রায় ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন। এই খবর ডেমোক্র্যাটদের জন্য খারাপ।
আমেরিকান মুসলিমদের মধ্যে ২০১৬ সালে ৬৫ শতাংশ হিলারি ক্লিনটনকে এবং ২০২০ সালে ৮০ শতাংশ জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন। বারাক ওবামার ক্ষেত্রে এই অনুপাত ছিল ২০০৮ সালে ৮০ শতাংশ এবং ২০১২ সালে ৯২ শতাংশ। কমলা হ্যারিসকে প্রত্যাখ্যানকারী মুসলিম আমেরিকানরা ট্রাম্পকে ভোট দিতে পারেন। বেছে নিতে পারেন তৃতীয় কোনো প্রার্থীকে অথবা ভোট দেওয়া থেকে তাঁদের সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
মুসলিম আমেরিকানরা মনে করেন যে নির্বাচন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে ফেলা গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যানের শামিল। এমন পরিস্থিতিতে কোনো উদার গণতন্ত্রমনা মানুষ কী করবেন? আমেরিকান মুসলিমদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে শেখার আছে।
মুসলিম আমেরিকানরা তাঁদের ভোটের শক্তিকে সম্মান করেন। তাঁরা কমলা আর ট্রাম্প—উভয় পক্ষের নীতি বিশদভাবে বোঝেন। ঠিকমতো জেনেবুঝেই তাঁরা ভোট দেন।
আমেরিকান মুসলিমরা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতির ওপর প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েলপন্থী অবস্থানের যে আমেরিকান নীতি তার বিপরীতে, ফিলিস্তিনের পক্ষে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। কারণ, তাঁরা জনগণের সামনে হাজির করতে পারেননি। যদিও আমেরিকান মুসলমানদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্থান ঘটেছে। কিথ এলিসন ২০০৬ সালে প্রথম মুসলিম কংগ্রেসম্যান হয়েছেন। ২০১৬ সালে সোমালীয় শরণার্থী ইলহান ওমর এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের ফিলিস্তিনি রাশিদা তালিব জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থীদের তৈরি পরিকল্পনা ‘প্রজেক্ট-২০২৫’, যেখানে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়ানোসহ বিভিন্ন উগ্র-ডানপন্থী নীতি গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। ওই প্রজেক্টকে ‘বিপজ্জনক পরিকল্পনা’ অভিহিত করে হ্যারিস দাবি করেছেন যে, ট্রাম্প ওই প্রেজেক্টে জড়িত রয়েছেন। ফলে সাবেক ওই প্রেসিডেন্ট এবার নির্বাচিত হলে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিবেন বলে ভোটারদের সতর্ক করেছেন হ্যারিস। তবে ট্রাম্প অবশ্য ওই প্রজেক্টের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।