ইউক্রেনকে আর অতিরিক্ত অস্ত্র পাঠাতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রশাসন ইউক্রেনের প্রতি তার সামরিক সহায়তা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন লজিস্টিক এবং আইনি জটিলতার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতা ছাড়ার আগে ইউক্রেনকে আরো বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর পরিকল্পনায় বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে, বিশেষ করে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে মার্কিন আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) সরবরাহ করা এখন সম্ভব হচ্ছে না।
অস্টিন জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা সহজ নয় কারণ এর জন্য অন্যান্য গ্রাহকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই করা চুক্তি ভঙ্গ করতে হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও যুক্তরাষ্ট্র এর আগে যে দেশের সঙ্গে এই অস্ত্রের চুক্তি করেছে, তাদেরকে আগে সরবরাহ করতে হবে।
মার্কিন পক্ষ ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে বেশ কয়েকটি এমজিএম-১৪০ আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) পাঠিয়েছে। তবে, কিয়েভ আরও ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য অনুরোধ করেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাইছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ইউক্রেনকে আরো পাঠানো হোক, যাতে তারা রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। তবে, পেন্টাগন এতে দ্বিধায় পড়েছে এবং অতিরিক্ত ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
পেন্টাগন জানিয়েছে, ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত এটিএসিএমএস পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এর কারণ হলো, মস্কো ইতিমধ্যে তার মূল্যবান লক্ষ্যবস্তুগুলোকে ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার বাইরে সরিয়ে ফেলেছে, ফলে ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর কার্যকারিতা কমে গেছে। এছাড়া, বর্তমানে মার্কিন সেনাবাহিনীর মজুদে এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা খুবই সীমিত। পেন্টাগন প্রধান অস্টিন এ ব্যাপারে জোর দিয়ে বলেন, যে দেশের সঙ্গে আগে চুক্তি হয়েছে, তাদের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা যাবে না। চুক্তি ভঙ্গ করলে নতুন আন্তর্জাতিক প্রশ্ন উঠবে এবং সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর ইউক্রেন সম্পর্কিত নীতিতে পুনঃপরীক্ষা হতে পারে। এর ফলে বাইডেন প্রশাসন এখন ইউক্রেনকে অতিরিক্ত অস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে আরও সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন যদি পরবর্তীতে ইউক্রেন ইস্যুতে নতুন কোন দিক নির্দেশনা দেয়, তবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বদলানো সম্ভব।
এই অবস্থায় বাইডেন প্রশাসন এবং পেন্টাগন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, যেখানে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে হবে। বিশেষত, মার্কিন সেনাবাহিনীর মজুদ ও আন্তর্জাতিক অস্ত্র চুক্তির সঙ্গে এই বিষয়টির সংযোগ থাকায় মার্কিন কর্মকর্তারা খুবই সাবধানী পদক্ষেপ নিচ্ছেন।