যুক্তরাষ্টের ভূখণ্ড বাড়ানোর পরিকল্পনা কি ট্রাম্পের?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, তার শপথ নেয়ার আগেই একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি প্রশ্ন ঘুরছে: তিনি কি মার্কিন ভূখণ্ড সম্প্রসারণের চিন্তা করছেন?
একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ট্রাম্প বিভিন্ন সময়ে এমন কিছু বক্তব্য দিয়েছেন যা তার এমন পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিতে পারে। কখনো কথার ছলে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছেন, কখনো আবার পানামা খালকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার কথা বলেছেন।
সম্প্রতি, তিনি বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ, গ্রিনল্যান্ডও কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সিএনএনসহ একাধিক পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পরই গ্রিনল্যান্ড সম্পর্কে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এসব বক্তব্যের মধ্যে কোনটি নীতিগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব এবং কোনটি শুধু গণমাধ্যমের নজর আকর্ষণের কৌশল, তা নির্ধারণ করা কঠিন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প কানাডার কর্মকর্তাদের জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাদের উত্তর প্রতিবেশী কানাডাকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। এই প্রস্তাবটি পরিপ্রেক্ষিতে, ট্রাম্প আবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন। পানামা খাল, যা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি, বর্তমানে প্রায় ২৫ বছর ধরে পানামার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প সম্প্রতি ডেনমার্কের অধীনে থাকা গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা নেয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার জন্য গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা গ্রহণ একেবারে অপরিহার্য। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদেও তিনি এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
এছাড়া, ট্রাম্প মাদক ব্যবসায়ী চক্রগুলোকে বিদেশি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে আগ্রহী এবং মেক্সিকোর ভূখণ্ডে সামরিক বাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনাও করেছেন। মাদক চক্রের নেতাদের নির্মূল করতে বিশেষ বাহিনী পাঠানো এবং ফেনটানিল ল্যাবে বোমা হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন তিনি। যদি এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়, তবে এটি মেক্সিকোর সার্বভৌমত্বের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে।
গ্রিনল্যান্ড, কানাডা এবং পানামায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড সম্প্রসারণের ইচ্ছা ও মেক্সিকোতে সামরিক হামলার এসব পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত কিনা, এ বিষয়ে ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তবে ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পানামা খাল নিয়ে তার আগ্রহের পেছনে মার্কিন বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। পানামার ওপর চাপ সৃষ্টি করে জাহাজ চলাচলের শুল্ক কমানো গেলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিশেষ উপকারে আসতে পারে। চীন, কানাডা এবং মেক্সিকোর বিরুদ্ধে আরোপিত বাড়তি শুল্কের কারণে আমদানি খরচ বাড়তে পারে, আর পানামা খাল ব্যবহারের খরচ কমানো হলে শুল্কের ক্ষতি কিছুটা পোষানো যেতে পারে, এমন মত প্রকাশ করেছেন তিনি।
এছাড়া, ট্রাম্প ইতোমধ্যে কানাডা, চীন ও মেক্সিকোর ওপর আরো শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যা তার আমদানি শুল্কের বিষয়ে কঠোর অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।