৫০ টাকার ডাব ঢাকায় এসে হচ্ছে ১২০, অসহায় ক্রেতা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ১০:২৩ পিএম
গত কয়েকদিনের গরমে ঝালকাঠিতে ডাবের চাহিদা বেড়েছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডাবের চাহিদা তুঙ্গে। ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া এলাকা থেকে ট্রাকে করে ডাব যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীসহ দেশের বড় বড় শহরের আড়তে।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় ৫৫৫ হেক্টর জমিতে নারিকেলের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১শ ৮৫ হেক্টর, নলছিটি উপজেলায় ১শ ৭০ হেক্টর, রাজাপুর উপজেলায় ৯০ হেক্টর, কাঁঠালিয়া উপজেলায় ১শ ১০ হেক্টর জমিতে নারিকেল গাছের আবাদ হয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোসা. শাহিদা শারমিন আফরোজ বলেন, নারিকেল বাংলাদেশের অন্যতম অর্থ কারী ফসল। এই এলাকার নারিকেল এই উপজেলার চাহিদা মিটিয়েও আশেপাশের জেলা গুলোসহ ঢাকাও সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানালেন কৃষি কর্মকর্তা ।
এদিকে, রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবুয়াল খায়ের মাহমুদ রাসেল বলেন, আমরা পানির স্বল্পতার কারণে বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণে ডাব খাওয়ার পরামর্শ দেয়, কারণ, ডাবে সোডিয়াম, পটাসিয়াম থাকে। আমাদের শরীরের ঘামের মাধ্যমে যে লবণ বের হয়ে যায় সেটা পূরণ করে।
ঝালকাঠির ডাব ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বারবাকপুর এবং শুক্তাগড় ইউনিয়নের নারিকেল বাড়িয়া এলাকায় রয়েছে ডাবের একাধিক মোকাম। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে খুচরা ক্রেতারা ডাব কিনে মোকামে নিয়ে পাইকারদের হাতে তুলে দেন। প্রতিটি ডাবের আকারভেদে ক্রয়মূল্য ৫০থেকে ৬৫টাকা গাছ মালিককে দিতে হয় ক্রেতার।
গাড়িভাড়া দিয়ে পাইকারী বিক্রির মোকামে পৌছাতে ডাবপ্রতি আরও ৫টাকা খরচ হয়। এরপরে পাইকারদের কাছেও ডাবের আকারভেদে ৬৫ টাকা থেকে ৮০টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করা হয়। পাইকার সেই ডাব কিনে ট্রাকে লোড দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বড় বড় শহরগুলোর আড়তে পৌছাতে সেই ডাবের দাম হয়ে যায় ১০০টাকা। ভক্সপপঃ স্থানীয় খুচরা বিক্রেতা।
স্থানীয় এক পাইকার ব্যবসায়ী বললেন একই কথা। খুচরা বব্যসায়ীদের কাছ থেকে কিনে আড়ত পর্যন্ত পৌছাতে প্রায় ১০০ টাকা খরচের কথায় বললেন তিনি।
শহরের মধ্যে ডাব ক্রেতা মো. মুরাদ বলেন, এই গরমে ডাবের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু দামের কারণে সাধারণ মানুষ তা কিনে খেতে পারছে না। একটা ডাব এখন বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। আবার অনেকে এর থেকে বেশিও বিক্রি করছে। অথচ, কিছুদিন আগেও একটি ডাব আকারভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকায় কিনতে পেরেছি বলে জানান এক ক্রেতা।
আড়তদারদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা কিনে নিয়ে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে প্রতিটি ডাব বিক্রি করে। প্রান্তিক পর্যায়ের নারিকেল চাষিদের কাছ থেকে মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত হয়ে ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছতে দাম অনেক হলেও মূলত প্রকৃত চাষিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ চাষিদের।