ঘূর্ণিঝড়ে কবর থেকে বের হয়ে এলো লা’শ, পাঁচ মাস পরেও অক্ষত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৮:৩১ পিএম
ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় রেমালের চোখ রাঙানি দেখেছে উপকূলবাসী। এর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে উপকূলীয় জনপদ। এরই মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে কবরস্থান থেকে আসা একটি লাশ। কিন্তু মৃত্যুর ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও শরীরে কোনও ধরনের পচন ধরেনি। এমনকি তার কাফনের কাপড়টিও ছিল অক্ষত। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার আমতলীতে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল চলে গেলেও রেখে গেছে শত সহস্র ক্ষত। এর তাণ্ডব দেখেছে উপকূলবাসী। ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পায়নি কাচা ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমিসহ ফলদ গাছও। ২৬ মে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ২২ ঘণ্টা তাণ্ডব চালায় রেমাল।
তবে এবার ভয়ংকর এক ঘটনা দেখেছে বরগুনার আমতলীবাসী। যা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। রিমালের তাণ্ডবে পুরো লঞ্চঘাট এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ সময় লঞ্চঘাট জামে মসজিদের কবরস্থান থেকে একটি লাশ ভেসে আসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা দেখতে এসে ভিড় করে। কিন্তু কেউ ভয়ে লাশের কাছে যেতে সাহস পায় না।
এ সময় স্থানীয় সোলায়মান নামে এক সাহসী যুবক প্রচণ্ড ঝড় উপেক্ষা করে লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করে। লাশটি দেখতে শ শ মানুষ ভিড় জমায়। ২৭ মে মাগরিব নামাজের পর পুনরায় জানাজা দিয়ে লাশটি দাফন করে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, আমতলী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত কাঞ্চন আলীর স্ত্রী আফসুরান ৫ মাস আগে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। লঞ্চঘাট জামে মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়। সোমবার আনুমানিক দুপুর দেড়টায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে পুরো লঞ্চঘাট এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এবং কবরস্থানের মাটি সড়ে যায়। সেই সাথে বেশ কিছু কবর ঢেওয়ের স্রোতে ভেঙে যায়।
এতে কবরস্থান থেকে বেরিয়ে যায় আফসুরানের লাশ। খবর পেয়ে স্বজনরা এসে লাশটি উদ্ধার করে। কিন্তু তার শরীরে কোনও ধরনের পচন ধরেনি। এমনকি তার কাফনের কাপরটিও ছিল অক্ষত।
স্থানীয়রা জানান, মৃত কাঞ্চন আলী ও তার স্ত্রী খুব পরহেজগার মানুষ ছিলেন। কখনও পর পুরুষের সাথে দেখা দিতেন না সবসময় পর্দা করতেন।
লঞ্চঘাট জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. আতিকুর রহমান বলেন, আমি তার জানাজা পড়িয়েছি। স্বাভাবিকভাবে কোন লাশ দাফনের পর কয়েকদিনের মধ্যে শরীরে পচন ধরে মাটির সাথে মিশে যাওয়ার কথা। কিন্তু তার কাফনের কাপড়টুকুও ছিল অক্ষত। এটা নিঃসন্দেহে আল্লাহর কুদরত। এ ধরনের ঘটনা সত্যি অলৌকিক। আমি প্রথম এরকম ঘটনার সাক্ষী হলাম।
গেল ২৬ মে রেমালের তাণ্ডবে বাড়িঘর,গাছপালা,ফসলি জমিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভারী থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত এবং জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে নিন্মাঞ্চল তলিয়ে গিয়ে কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রভাব পুরো দেশের উপর পরবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।