গ্রামীণ গরু ছাগলের জেলখানা কি আজও আছে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৪, ০২:৫৯ পিএম
জমির ফসল কিংবা বাগান নষ্ট করলে গবাদিপশুকে আটকে রাখা হয় বিশেষ ধরনের এক জেলখানায়। এককালে এদেশের গ্রামে গঞ্জে এই ধরনের জেলখানা বহুল প্রচলিত ছিল। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় খোঁয়াড়। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর সভার মাধ্যমে নিলামে তোলা হতো এসব খোঁয়াড়। এরপর নিলামে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে কোনো ব্যক্তি এই খোঁয়াড় নিতো ইজারা চুক্তিতে।
গরু ছাগলের কবল থেকে জমির ফসল এবং বাগান রক্ষার জন্য খোঁয়াড় ব্যবস্থাই ছিলো একটি মোক্ষম পদ্ধতি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অভিযুক্ত পশুকে খোঁয়াড়ে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখতে পারতেন। বিনিময়ে তারা খোয়াড় ইজারদার থেকে কিছু টাকাও পেতেন। অনেকে আবার ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেও প্রতিপক্ষের গরু, ছাগল, মহিষ খোঁয়াড়ে দিয়ে আসতেন।
খোঁয়াড়ে আটকে রাখা সেই পশুকে আবার ছাড়িয়ে আনার বিনিময়ে পশুর মালিক নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু টাকা দিতেন খোঁয়াড় ইজারদারকে। এভাবেই পরিচালিত হতো খোঁয়াড় ব্যবস্থা। কিন্তু কৃষিতে আধুনিকায়নের ফলে কালের আবর্তে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে কত যুগের এই পুরনো প্রথা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রতিটি পৌরসভা ও ইউনিয়নে আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনার কারণে আজ খোঁয়াড় ব্যবস্থা প্রায় বিলুপ্তির পথে। হাতে গোনা কয়েকটি খোঁয়াড় থাকলেও সেগুলো এখন নিষ্ক্রিয়। যা ও দুই একটা আছে- সেগুলো বছরে মাত্র ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার বাৎসরিক ইজারায় নিয়েও টাকা উঠাতে পারছেন না ইজারাদাররা। অথচ ৯০ দশকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক একটি খোঁয়াড়ের জন্য নিলামে ডাক হাকা হতো ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এক সময় যেসব খোঁয়াড় থেকে সরকারের কোটি কোটি টাকা আয় আসতো, সেগুলোর চল আজ শূন্যের কোঠায়।